• ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বস্তিতে আগুনে পুড়েছে প্রায় দেড়শ’ ঘর-দোকান

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত নভেম্বর ২৫, ২০২০
বস্তিতে আগুনে পুড়েছে প্রায় দেড়শ’ ঘর-দোকান

বিবি এন নিউজ ঢাকাঃ  সকাল সোয়া ১১টা। ছাইয়ের গাদায় বিয়ের লাল বেনারসি এবং গতকাল নীল শাড়ির পোড়া অংশ উল্টেপাল্টে দেখছেন আর কাঁদছেন নববধূ বিউটি চন্দ্র বণিক। পাশেই স্বামী দোলন চন্দ্র তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। ভস্মীভূত আসবাবপত্রের মধ্যেও যদি অক্ষতা পাওয়া যায়, এই আশায় কেউ কেউ খুঁজছেন নিজের প্রিয় কোনো বস্তু। সোমবার দিবাগত রাতের আগুনে মহাখালীর সাততলা বস্তির প্রায় দেড়শ’ ঘর-দোকান পুড়ে গেছে। নিঃশেষ করে দিয়েছে বস্তিবাসী অনেককে। সব হারিয়ে মানুষগুলো অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বিউটি চন্দ্র জানান, দুই বছর এক মাস আগে আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। গত এক বছর ধরে বস্তিতে ভাড়া বাসায় থাকছি।গতকাল শাড়ি, বিয়ের বেনারসি, দুই ভরি স্বর্ণ, সিঁদুর, নগদ ৪০ হাজার টাকা, মোবাইলফোন পুড়ে গেছে। হাতের ফোনটি চার্জে থাকায় সেটাও পুড়ে ছাই হয়েছে। কিছুই নিয়ে বের হতে পারিনি। স্বামী দোলন চন্দ্র বলেন, ২৮শ’ টাকা ভাড়ায় বস্তিতে এক কক্ষের একটি রুমে থাকতাম আমরা। স্থানীয় একটি পোলার ফ্যাক্টরিতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে পণ্য লোড-আনলোডের কাজ করি।বিউটি চন্দ্র বলেন, মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় সব পুড়ে ছাই। আমরা শুধু দাঁড়িয়ে পোড়ার দৃশ্য দেখছি আর কাঁদছিলাম। প্লাস্টিকের পণ্যে, মুদি, মনোহারি, জুতা, মোবাইল ফোন, লেপ-তোষক ইত্যাদি মিলিয়ে চার মালিকের প্রায় ৩৫টির বেশি দোকান ছিল। সব পুড়েছে। আগুনের সূত্রপাত হয় একটি মুদি দোকানের ফ্রিজের সংযোগ থেকে। এছাড়া ১১৪টি ঘর পুড়েছে। দোলন চন্দ্র বলেন, গ্রাম থেকে সব হারিয়ে ঢাকায় এসেছি। এখন কোথায় যাবো। সকাল থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলরের লোকজন আমাদের নামের তালিকা নিয়ে গেছে।
নিজের পোড়া ভিটায় দাঁড়িয়ে আছেন কিশোরী সুমাইয়া। পাশের ধ্বংসস্তূপে নিজের বই খুঁজছিলেন লিখন। যদি একটি বই অক্ষত থেকে যায়। বাবা বাবর আলী প্যারালাইজডস হওয়ায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আর নিয়মিত করতে পারেনি। স্থানীয় একটি গার্মেন্টে চাকরি নেয়। করোনার কারণে আপাতত চাকরি করছেন না সুমাইয়া।