• ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

এখনই সময়, জেগে উঠো ছাতকবাসী:মেয়র পদপ্রার্থী ন্যান্সি

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ৫, ২০২১
এখনই সময়, জেগে উঠো ছাতকবাসী:মেয়র পদপ্রার্থী ন্যান্সি

 

ছাতক। বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে ছাতককে বলা হয় শিল্প নগরী। বৃটিশ সাম‍‍্যাজ‍্যের শাসনামলে ১৯২৪ সালে অবিভক্ত বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হন, কলকাতাকে যখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় নগর বলা হতো তখন বা তারও আগে থেকেই ম‍্যাকনিল কিলবার্ন সহ অসংখ্য ব‍্যবসায়ী ছাতকের সাথে ঔপনিবেশিক ব‍্যবসায়ীক সম্পর্ক গড়ে উঠে।
একে একে ছাতকে গড়ে উঠে ব‍ৃহৎ শিল্প কারখানা। মহান স্বাধীনতার পর আজ অবধি ছাতক শহর যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে। সরকারের পর সরকার পরিবর্তন হয়েছে, জনপ্রতিনিধির পর প্রতিনিধি এসেছেন চলে গেছেন, আক্ষরিক অর্থে ছাতক শহরের কোন পরিবর্তন ঘটেনি।
ইতিহাস স্বাক্ষী বাংলাদেশের যেকোন পৌর শহর থেকে সবচেয়ে বেশি ট‍্যাক্স ভ‍্যাট সরকারকে রাজস্ব দিয়ে এসেছে ছাতক। পাথর, চুনাপাথর, বালু, দেশের সবচেয়ে মান সম্পন্ন সিমেন্ট, দেশের প্রথম রেলওয়ে স্লিপার এই ছাতক থেকেই সরবরাহ করা হয় । ছাতকের সম্পদ দিয়ে গোটা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের ভিত তৈরি হয়।
কিন্তু আজ অবধি আমাদের ভাগ‍্যে একটি ডিভাইডার রোড প্রশস্ত ফুটপাত ও জুটেনি।
উপরন্ত লাফার্জ ফেরিঘাট থেকে রেলওয়ে এলাকা হয়ে পুরাতন কোর্ট রোডের মারাত্মক বেহাল দশা ছাতকবাসীর দীর্ঘশ্বাসের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। এই রাস্তার মালিকানা, সড়ক ও জনপথ, এলজিইডি এবং রেলওয়ে বিভাগ। কিন্তু প্রতিটি ডিপার্টমেন্টই তো সরকারের। এই সড়কটি তো গায়েবি নাজিল হয় নি। জনপ্রিনিধি আর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের যৌথ সমন্বয়ে এই সড়কটির উন্নতি করতে না পারা ব‍্যার্থতারই নামান্তর।
গুরুত্বপূর্ণ এই শহরে একটি পৌর কমিউনিটি ক্লিনিক কিংবা একটি পৌর মার্কেট আমাদের জন্য কেউ করতে পারেননি।
গনক্ষাইই থেকে চরেরবন্দ, তাতিকোনা থেকে পশ্চিম বাজার বৃহত্তর এলাকার জন্য একটি মাত্র মাছ বাজার। নদীর দুই পারে থাকা শত শত কার্গো আর স্টিল নৌকার স্টাফ সহ লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য ছোট্ট গতবাঁধা মাছের শেড থেকেও উত্তরণ হয়নি ছাতকবাসীর।
শুধুমাত্র নিজের সন্তানদের ভাল একটি প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করানোর উদ্দেশ্যে নিজের জন্মভূমি ছেড়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদেরকে পরিবার সহ সিলেটে বসবাস করতে হয়। লজ্জা লাগে যখন দেখি ছাতকের রথি মহারথিরা গোবিন্দগঞ্জে জনাব আয়ুব করম আলী প্রতিষ্ঠিত একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চাদের ছাতক থেকে নিয়ে পড়ান। কিন্তু সামর্থ‍্য সুযোগ থাকার পরও ছাতকে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে পারেননা।
অথচ আমার বিশ্বাস সেই কর্তা ব‍্যক্তিরা হাফিজ মজুমদার ট্রাষ্টের সাথে যোগাযোগ করলে সিলেট স্কলার্স হোমের একটি শাখা ছাতকের মতো জায়গায় প্রতিষ্টা করা কঠিন কোন কাজ ছিলনা।
ছাতক গেলে কষ্ট হয় যখন দেখি তাহির প্লাজার সামনে থেকে জালালিয়া মাদ্রাসা পযর্ন্ত শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাকে একটি অঘোষিত বাসস্ট্যান্ড ও ট্রাক স্ট‍্যান্ডে পরিণত করা হয়েছে।
আমরা যখন সিলেটের গোলাগঞ্জ পৌরসভায় যাই গোলাপগঞ্জ পৌর শহরের ডিভাইডার রোড আর সোডিয়াম স্ট্রিট লাইট দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। যখন সুনামগঞ্জ শহরে যাই বিশ্বাস করুন প্রিয়াঙ্গন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে মউজদিন সড়ক, মনোয়ার বখত চত্বর, বক চত্বর, শাপলা চত্বর, সুরমা নদীর তীরে গড়ে উঠা রিভার ভিউ দেখে আমরা পুলকিত হই।
আহহহহ নিজ এলাকায় ফিরে দু:খ হয় কষ্ট হয় আমার এলাকা এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া স্বত্বেও আমাদের ভাগ‍্যে আজও একটি পৌর পার্ক জুটলোনা। কোথাও করা গেলোনা একটি নান্দনিক চত্বর?
আমরা যখন বর্ষা মৌসুমে ছাতক গিয়ে হাটি প্রতিটি রাস্তার কাদামাটি মানুষের নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠে। যখন শুষ্ক মৌসুম আসে তখন পুরো শহরটাই হয়ে উঠে ধুলোয় ধূসর।
ছাতকের বাস্তবতার প্রেক্ষিতে উত্তর সুরমাবাসী যেনো আজও কর্তা ব‍্যক্তিদের কাছে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক! শুধুমাত্র কয়েকটি রাস্তার ঢালাই ছাড়া কোন ধরনের কোন নাগরিক সুবিধা উত্তর সরমা বাসীর কপালে আজও জুটেনি। অনেকেই মাঝেমধ্যে রসিকতা করে বলেন, দোয়ারার বাংলাবাজার আর ছাতক পৌরসভার মধ‍্যে পার্থক্য কোথায়?
কয়েক মাস আগে এক টিভি নিউজে দেখলাম একজন পুলিশ কর্মকর্তা বললেন- ‘ চাদাবাজি ছাতকের মানুষের রক্তের সাথে মিশে গেছে’। কি আশ্চর্য কত বড় অপমানজনক কথা তিনি বলেছেন! এত বড় কথার প্রতিবাদ ছাতকের কোন কর্তা ব‍্যক্তিকে করতে দেখিনি। তাহলে কি সত‍্যি তা আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে? কেন কি কারনে ছাতকের নিরীহ জনগণকে এই অপবাদ পেতে হলো? আজও কি ভাবার সময় হয় নি ছাতকবাসীর?
সাত লক্ষ মানুষের সংযোগ মাধ‍্যম ছাতক সুরমা সেতু। অপ্রিয় হলেও সত‍্য উত্তর সুরমাকে অবহেলিত রাখতেই বারবার এই সেতু নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা মুহিবুর রহমান মানিক এই ব্রীজের কাজ সম্পন্ন করে এপ্রোচ সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন করছেন। গোটা উত্তর সুরমাবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় সংসদ সদস্যকে অভিনন্দন।
এত সব অপ্রাপ্তি, বঞ্চনা, দুর্ভোগ, অবহেলার দায় কোন ব‍্যক্তি, দল, গোষ্ঠীর উপর একক ভাবে বর্তায় না। এই ব‍্যর্থতার দায় আমাদের সকলের। তবে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কোন একদিন জবাবদিহি করতেই হবে।
এতসব সমস্যা কেউ এসেই রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে আমার বিশ্বাস পরিকল্পিত ভাবে কাজ করলে, এবং সম্পদের সুষম ব‍্যবহার করলে, শহরটাকে বদলে দেওয়ার মানসিকতা থাকলে এই ছোট্ট শহরটাকে সাজাতে পাঁচ বছর সময় যথেষ্ট।
কিন্তু এই কাজ গুলো কাউকে না কাউকে একটি জায়গা থেকে শুরু করতেই হবে।
সে পরিবর্তনের আহবান নিয়ে এসেছেন ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী Rashida Ahmed Nancy

তিনি বৃহত্তর সিলেটের প্রথম নারী মেয়র প্রার্থী। বাংলার সাহসী নারীর প্রতিচ্ছবি নারায়ণগঞ্জের জনন্দিত মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভির পরেই তিনিই একমাত্র নারী যিনি সরাসরি মেয়র প্রার্থী হয়েছেন।
তিনি একটি গৌরবোজ্জল পরিবারের উত্তারাধিকার। তার বাবা মরহুম হবিবুর রহমান (হবি চেয়ারম্যান ) শুধু ছাতক দোয়ারা নয় গোটা পশ্চিম সিলেটের সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিচারিক ব‍্যক্তিত্ব। রাশিদা আহমদ ন‍্যান্সি প্রায় এক দশক ছিলেন ঐতিহ্যবাহী পাল্প এন্ড মেপারমিল উচ্চ বিদ‍্যালয়ের শিক্ষিকা।
তাঁর স্বামী রজনু আহমদ ছিলেন অবিভক্ত ছাতক সদর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার, ছাতক পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র।
তার পরিবারের সদস্য ছাতক-দোয়ারার সাবেক তিনবারের সংসদ সদস্য জাতীয় নেতা কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।

তার ফুফুত ভাই ছাতকের সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ আবরু মিয়া তালুকদার।

রাশিদা আহমদ ন‍্যান্সি ছিলেন সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও একাধিক বার সম্পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা সম্পন্ন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি অবশ‍্যম্ভাবি পরিবর্তনের আহবান নিয়ে দল, মত,জাতী,গোষ্ঠি, ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে ছাতকের সর্বস্তরের মানুষের দ্বারে দ্বারে, দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন।
এই নির্বাচন স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন। দেশে আইনী বাধ‍্যবাধকতার কারনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু এসব স্থানীয় নির্বাচনে সরকারের উত্তান পতন নির্ভর করেনা।
রাশিদা আহমদ ন‍্যান্সি ছাতকের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার আদায়ে, ছাতকের ইতিহাস ঐতিহ্য অস্তিত্ব রক্ষার আহবান নিয়ে ছাতকের জণগনকে জাগিয়ে তুলেছেন।
ছাতকের স্বার্থেই ছাতকের মানুষকে জেগে উঠা আজ সময়ের অপরিহার্য দাবি।
বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের জমিদারী শাসনামলের যাতাকলে পিষ্ট জাতী আর কোন জিঞ্জিরে আবদ্ধ থাকতে চায়না।
একজন নারী জেগে উঠেছেন, জাগাতে এসেছেন!
জেগে উঠো ছাতকবাসী। জাগতেই হবে আজ তোমায়।