• ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শুধু উচ্ছেদ নয় খাল খনন করে সংরক্ষণ করতে হবে

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ২৩, ২০২৩
শুধু উচ্ছেদ নয় খাল খনন করে সংরক্ষণ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সুনামগঞ্জ  শহরের ৫ টি খাল জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।বন্যা হলে বাসা বাড়ি ডুবে যায়।শহর প্লাবিত হয়। ২০২২ সালের বন্যায় শহরের মানুষজন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। ৫ টি খালই শহরের প্রধান শত্রু। দখল দূষনে অস্হিত্ব হারিয়ে এসব খালগুলো শহরবাসীকে  দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দেয়। পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার মামলায় খাল উদ্ধার অভিযান বর্তমানে চলছে। খালে যখনই উচ্ছেদ অভিযান চলে, শুধু অসহায়দের ভিটে উচ্ছেদ হয় কিন্তু প্রভাবশালীরা  দখলেই থেকে যান। খালের পূর্বাবস্হা ফিরিয়ে আনতে হলে সকল দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। খাল উদ্ধার অভিযান মাঝখানে এসে যেন থেমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভাঙ্গা গড়ার নাটক শহরবাসী আর দেখতে চায়না। খালের  অভিযানে প্রবেশদ্বার খোলা হলেও পতিত মুখে এসে বন্ধ হয়ে যায়। জাওয়ার হাওরে গিয়ে মিশেনা। পতিত মুখের দখলদারদের উচ্ছেদ করা না হলে পানি নিষ্কাশনে বাঁধা বিপত্তি সৃষ্টি হবে,এবং শহরে  জলবদ্ধতা  ও দূর্ভোগ আরো বাড়বে।

১৯৫২ সালের ম্যাপ অনুযায়ী খাল চিহ্নিত করে অভিযান শেষ করতে হবে। এবং খাল দখলকারীদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। সত্যিকার দখলবাজদের উচ্ছেদ করা না হলে গণ- আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী খাল উচ্ছেদ না হলে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করতে হবে।

এসময় তারা আরো বলেন, শুধু  উচ্ছেদ নয় পাশাপাশি খাল খনন করে সংরক্ষণ করতে হবে।
খননের পর দুইপাশে গার্ডওয়াল,লুপ,ওয়াকওয়ে  নির্মান ও গাছ লাগানো যেতে পারে।এতে শহরের পার্কের আবহ সৃষ্টি হবে। পর্যটন শহরে পরিনত হবে সুনামগঞ্জ।

২২ জুলাই , শনিবার  বেলা ১১ টায় শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘বেলা’ কর্তৃক মামলায় উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে পর্যালোচনা সভায় এমন বক্তব্য তুলে ধরেন বক্তারা।

সভাটি আয়োজন করে সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন ও হাওর এরিয়া আপলিফমেন্ট সোসাইটি হাউস।  হাউসের নির্বাহি পরিচালক সালেহীন চৌধুরী  শুভ’র পরিচালনায় ও পরিবেশ রক্ষা  আন্দোলনের সভাপতি একেএম আবু নাসের এর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান,রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু,সাবেক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শেফু, জেলা পরিষদ সদস্য সাবেক প্যানেল মেয়র মনির উদ্দিন, জেলা পরিষদ সদস্য সেলিনা আবেদীন। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আজাদ রুমান,অ্যাডভোকেট শাহিনুর রহমান শাহিন,পরিবশ রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সদরুল,পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম সাঈদ,শওকত আলী,সাংবাদিক মাসুম হেলাল সাংবাদিক ,জসিম উদ্দিন, লোকছান মিয়া,গোলাম হোসেন অভি,রুশনা আক্তার সহ প্রমুখ।

প্রধান আলোচক শাহ্ সাহেদা আখতার বলেন,২০০৫ সাল থেকে খামারখাল নিয়ে কাজ করি। সবকটা খাল উদ্ধারে জেলা প্রশাসক,পৌর মেয়রের সাথে কথা বলি। সুনামগঞ্জ এসে নাগরিক সংলাপ করি। ২০২২ সালে  ৫ খাল উদ্ধারে জেলা প্রশাসক,পৌর মেয়রকে নোটিশ পাঠাই। কিন্তু নোটিশ কাজে আসেনি।পরে হাইকোর্টে মামলা করি।আদালতের আদেশ নিয়ে আসায় এখন প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। খামারখালে দখলদারদের তালিকায় ২০০৫ সালে ২৪ জন,২০১৭ সালে ৮৪ জন,২০২২ সালে এসে ৭৯ জন দেখানো হয়েছে। এখানে গড়মিল দেখা যাচ্ছে।আমরা চাই দখলদারদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে। এবং শুধু অসহায়রা যেন উচ্ছেদ না হয়,দখলকারী সকলকেই উচ্ছেদ করতে হবে। আদালতের আদেশ মানা না হলে, বেলার পক্ষ থেকে আবারো আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, শহরের জলাবদ্ধতা দূর করতে এবং পানি প্রবাহ সচল রাখার দায়িত্ব ‘বেলার’ না, এটি জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়রের। তারা এটি না করায় সুনামগঞ্জবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বেলা হাইকোর্টে যেতে বাধ্য হয়। সুনামগঞ্জের মানুষের সহায়তা পেয়েছি। আদালতের আদেশ নিয়ে এসেছি। আদেশ বাস্তবায়ন কতটুকু সেদিকে খেয়াল রেখে বেলাকে সহায়তা করার আহবান জানান তিনি।
সভা শেষে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির সমন্বয়ক শাহ সাহেদার নেতৃত্বে সুনামগঞ্জের পরিবেশ কর্মীদের নিয়ে শহরের খাল উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শন করেন।