• ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মসজিদের ভিতর যুবককে মারপিট ও সরকার বিরুধী বক্তব্যের জন্য ছালাম মাদানী সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
মসজিদের ভিতর যুবককে মারপিট ও সরকার বিরুধী বক্তব্যের জন্য ছালাম মাদানী সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:ছাতকে মসজিদের ভিতর যুবককে মারপিট ও সরকার বিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ এনে মসজিদের খতিব,জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ছাতক থানায় মামলাটি (নং-১৪) রেকর্ড ভুক্ত হয়েছে।

ছাতক থানায় এই মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা মৃত দরাছত আলীর ছেলে কাওছার আহমদ।

মামলার আসামী করা হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার জামে মসজিদের খতিব ও গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানী, বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের খুজারপাড়া গ্রামের মৃত কমর উদ্দিনের ছেলে মোখতার আলী, পাঠানের গাঁও গ্রামের মাহমুদ আলীর ছেলে মোজাহিদ, ছাতক উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের আপ্তাব উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মগনী এবং গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বেরাজপুর গ্রামের আমির আলীর ছেলে মতিউর রহমান।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, আসামীরা সকলেই জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রধান আসামী মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানী জামাতের একজন বড় মাপের নেতা ও গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার জামে মসজিদের খতিব।
গত ২৭ জানুয়াররি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পূর্বে মসজিদে সরকারি শিক্ষানীতি বিষয়ে সরকার ও সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অশালীন, কুরুচীপূর্ন ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে ছিলেন মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানী।
এক পর্যায়ে তিনি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশ্লীল ও বিরূপ মন্তব্য সহ সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রদান করলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এসময় মামলার বাদী কাওছার আহমদ বাঁধা প্রদান করলে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পরে পবিত্র জুম্মার নামাজ শেষে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খতিব মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানীর নির্দেশে মসজিদে কাওছার আহমদের উপর হামলা চালানো হয়।

ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান এ ঘটিনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে তাঁর ফেসবুকে এক পোষ্ট দেন।তিনি পোষ্টে বলেন,উনি প্রখ্যাত আলীম মৌলানা আব্দুছ ছালাম আল মাদানী। মাশাআল্লাহ নূরানী চেহারা।নি:সন্দেহে তিনি একজন কোরআন হাদীস বিশেষজ্ঞ।তিনি প্রিন্সিপাল গোবিন্দনগর ফজলিয়া মাদ্রাসা।খতিব গোবিন্দগন্জ নূতন বাজার জামে মসজিদ।প্রত্যেক শুক্রবার জুমআর নামাজের পূর্বে কোরআন হাদিসের কথা বলেন এবং অত্যন্ত সুকৌশলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নসিহত করেন।আমি কাপুরুষের মত না শুনার ভান করি।গত শুক্রবার আমি মসজিদে ছিলামনা।ওয়াজের এক পর্যায়ে তিনি প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন ।( অনেক প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়) আমাদের ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের একটি হলের নাম ছিল ইকবাল হল।স্বাধীনতার পর এই পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টার নাম বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগ হলের নাম রেখেছে সূর্য সেন হল।(এই সূর্য সেন বৃটিশ খেদাও আন্দোলনে লড়াই সংগ্রাম করে বাঙালির স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন) মৌলানা সাহেব বললেন কেন পাকিস্তানের ইকবালের নাম সরিয়ে একজন সন্ত্রাসী কাফেরের নামে এই আ:লীগ সরকার হলের নাম করন করল? ইত্যাদি ইত্যাদি –
এক যুবক দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করল।মৌলানা উচ্চস্বরে ধমক দিয়ে তাকে
থামিয়ে দিলেন।মসজিদের মুসল্লিরা উভয়কে থামিয়ে নিবৃত্ত করলেন।যথারীতি নামাজ শেষে ১০/১২জন চিন্নিত শিবির ক্যাডার সটাম্প রড নিয়ে মসজিদে ঢুকে প্রতিবাদী যুবককে বেধড়ক পেটাতে থাকল। মৌলানা চুপচাপ দেখে গেলেন? কোন কথা নেই।একটিবার যদি তিনি থামাবার চেষ্ঠা করতেন! তাহলে কথা ছিল না।( এই পাড়ার এক ডজন লোক প্রত্যক্ষদর্শী)কারণ তিনি হলেন জামাতের পান্ডা,আর যারা যুবককে মসজিদের ভিতর পেটাচ্ছে তারা হল শিবিরের গুন্ডা? সুতরাং তিনি নিশ্চুপ ।

গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার জামে মসজিদের খতিব ও গোবিন্দনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ  জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুস ছালাম আল মাদানী এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যম কে জানান, মামলার বিবরণ মিথ্যাচার দিয়ে সাজানো হয়েছে। তাকে হয়রানী ও হেয় করার জন্য এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, তিনি ওই দিন বর্তমান পাঠ্যপুস্তকের বিভিন্ন ত্রুটি সম্পর্কে আলোচনা ও এসবের সংশোধনের বিষয়ে বয়ান দিয়েছিলেন। সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি।