• ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ছাতকে সুলতান শাহ আরেফিন নামীয় পীরস্থানের ভূমি জবর দখলের চেষ্টা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২১, ২০২৩
ছাতকে সুলতান শাহ আরেফিন নামীয় পীরস্থানের ভূমি জবর দখলের চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক:ছাতক পৌর সভার ফকির টিলায় সুলতান শাহ আরেফিন (রঃ)’র মোকাম ও তৎসংলগ্ন কবরস্থান সহ পীরস্থানের ভূমি জবর দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে একটি চক্র। ইতিমধ্যেই ভূমি দখলে নিতে মোকাম পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের উপর হামলা সহ আদালতে পৃথক দু’টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে ওই চক্র। এতে দখলদার চক্রের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন গ্রামবাসী ও এলাকার ধর্মপ্রান মানুষ। জানা যায়, হযরত শাহজালালের সফরসঙ্গী আউলিয়া ও দরবেশ হযরত সুলতান শাহ আরেফিন (রঃ)’র শহরের ফকিরটিলা এলাকায় মোকামও গ্রামবাসীর কবরস্থান রয়েছে। ওই স্থানটি সরকারী রেকর্ড পত্র সহ এলাকার মানুষের কাছে পীরস্থান হিসেবে পরিচিত। যুগ-যুগ ধরে এ পবিত্রস্থান একটি কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এর উন্নয়ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সর্বজন স্বীকৃত এ পীরস্থানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রান লোকজন আসেন মাজার জিয়ারত সহ বিভিন্ন মানত নিয়ে। কখনো কোনদিন মোকাম, কবরস্থান ও পীরস্থানে ভুমি নিয়ে কেউ মালিকানা দাবী করেনি।

সম্প্রতি শহরের বাগবাড়ি গ্রামের আব্দুস সোবহানের পুত্র আব্দুস শহীদ মনা পীরস্থানের ভুমির মালিকানা দাবী করে জবর দখলের চেষ্টায় লিপ্ত হয়। এলাবাসীর প্রতিবাদে জোর দখলে ব্যর্থ হয়ে মোকাম পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজী সহ পৃথক দুটি সাজানো মামলা দায়ের করে। ওই মোকামের পবিত্রতা ও নিরাপত্তার স্বার্থে মোকামের বাউন্ডারী কাজ শুরু করেন পরিচালনা কামিটি। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে আব্দুস শহীদ মনা দেয়াল নির্মাণে বাধা-বিপত্তি ও নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এনিয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ ৭ জানুয়ারী উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি সালিশ-বৈঠকে বসেন। এ সময় কাগজ-পত্র পরির্যালোচনা করে বিরোধকৃত ভুমি নিয়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে নামজারী রেকর্ড সংশোধনের জন্য নামজারী রিভিউ মামলা চলামান থাকায় সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা সমাপ্ত হয়।
এসব অভিযোগ তুলে ধরে শনিবার সকালে ছাতক প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফকির টিলা গ্রামের বাসিন্দা এস এম কয়েছ মিয়া। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়,শাহ আরেফিন (রঃ) মোকাম,কবরস্থান সহ ১.৩৫ একর ভুমি পীরস্থান রকম ভুমি স্থির ও অখন্ড ভুমি হিসেবে ইহার স্বাভাবিক স্বকিয়তা এখনো অটুট। পীরস্থান রকম ভুমি সর্ব সাধারনের ব্যবহারযোগ্য,ক্রয়-বিক্রয় যোগ্য নয়। উক্ত ভুমি রেকর্ড অনুযায়ী পীরস্থান, তা ওয়াকফ সম্পত্তি না হলেও আইন অনুযায়ী দীর্ঘকাল ব্যবহারে ওই সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিনত হয়ে যায়। আর ওয়াকফ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, জবর দখল করা বা চেষ্টা করা ওয়াকফ আইন অমান্যের সামিল।

পীরস্থান নামে রেকর্ডীয় এ ভুমি রক্ষায় প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ফকিরটিলা এলাকার ধর্মপ্রান মানুষ। সংবাদ সন্মেলন আরো বক্তব্য দেন পৌর কাউন্সিলর হাজী নাজিমুল হক, সাবেক মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলকাছ আলী, মোকাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ মোঃ ফরিদ মিয়া, সেক্রেটারি মোজ্জান্মেল হক রুহেল,বাহারুল হক,সামছুর রহমান বাবুল, বখতিয়ার হোসেন,শাহ আলম, জামাল মিয়া, শাহিন মিয়া,শাহ ফারুক মিয়া, শাহ মোহাম্মদ মইনুল হাসান,ফকির আলী আহমদ,সমুজ মিয়া,আমির আলী, শাহ হিরণ মিয়া প্রমুখ।

উল্লেখ্য যে গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বাগবাড়ি গ্রামের মরহুম আব্দুস ছোবহানের পুত্র আব্দুস শহিদ মনা এক সংবাদ সন্মেলনে অভিযোগ করে জানান,১৯৭৭ ইং সনে ৬৬০০ দলিলে বাগবাড়ি গ্রামের আব্দুস সোবহান ও একই সনে ৬৪৭৯ দলিলে আব্দুস সোবহানের পুত্র ভানু মিয়া ২৬ শতক ভুমির ক্রয় সুত্রে মালিকও দখলকার। তারা দীর্ঘদিন উক্ত ভূমিতে বালু-পাথর ড্রামিং করে ব্যবসা করেছেন। আব্দুস সোবহান মারা যাওয়ার পর উত্তরাধিকার সূত্রে তার পুত্রগণ ভুমির মালিক হয়েছেন। কিন্তু গত ২ বছর ধরে বালু-পাথর ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ায় ওই ভুমি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এরই মধ্যে ফকির টিলা গ্রামের ফারুক মিয়া,ইলিয়াছ মিয়া,বাহারুল হক,এস এম কয়েছসহ কতিপয় লোকজন ভুমিতে ইট-বালু ড্রাম্পিংও জমি ভাড়া দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন বলে দাবি করেন।