• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ঐক্যের ডাক দিলেন মাওলানা আজহারী

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
ঐক্যের ডাক দিলেন মাওলানা আজহারী

সাজিদুল ইসলাম রানা:হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার কিছু বিষয় নিয়ে মতনৈক্য তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে কলম ধরেছেন।

“একজন বিদগ্ধ আলিমে দ্বীনের বিদায়কে কেন্দ্র করে এদেশে যেমনি সকল ইসলামপন্থিরা দল মত নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাড়িয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আমরা সবাই এক কাতারে দাঁড়াতে সমস্যা কোথায়? এ প্রশ্ন আজ সকল ইসলামপ্রিয় আম জনতার।

সমস্যাটা হল মূলত হিংসা, অহমিকা আর গোঁড়ামিতে। এই হিংসা, অহমিকা এবং গোঁড়ামির খাঁচা থেকে মুক্ত হতে না পারলে এই অঞ্চলে ঐক্য প্রক্রিয়া আর ইসলামি হুকুমত পাগলের প্রলাপ বকা ছাড়া অন্য কিছু নয়। সবাই ঐক্য চায় কিন্তু এক চুল পরিমান ছাড় দিতে নারাজ। সবার স্বপ্ন ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে দেখার কিন্তু একই স্বপ্নে বিভোর লোকদের মধ্যে নোংরা কাদা ছোড়াছুড়ি। পান থেকে চুন খসলে— উলঙ্গ আক্রমণ। বিভিন্ন মতাদর্শের আলিম ওলামাদের সহাবস্থান আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমতে কমতে একেবারে তলানিতে যেয়ে ঠেকেছে।

ইমাম ইবনুল জাওযি রহিমাহুল্লাহ ওনার “তালবিছে ইবলিশ” গ্রন্থে শয়তানের ব্যবসা প্রসঙ্গে লিখেছেন যে শয়তান জুলুম বিক্রি করে শাসকদের কাছে, কৃপণতা বিক্রি করে ধনীদের কাছে আর হিংসা বিক্রি করে আলিমদের কাছে। একথার চরম বাস্তবতা আমরা প্রকটভাবে দেখতে পাচ্ছি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির আলিমসমাজের অনেকের মধ্যে। হিংসা আর অহংকারের বিষবাষ্পে আজ ধীরেধীরে কলুষিত হয়ে যাচ্ছে আমাদের ধর্মীয় আঙ্গিনাগুলো।

যারা শত শত বিষয়ে মিল থাকার পরেও সামান্য কিছু অমিলের কারণে একজন মুসলিম ভাইকে অমুসলিমের সম্মানও দেয়না তারাই এদেশে ইসলামের মুখপাত্র দাবীদার। মনে রাখা দরকার, ভিন্ন মতাবলম্বিদের অচ্ছুৎ মনে করা মুহাম্মাদ (ﷺ‬) এর ওয়ারাসাদের স্বভাব হতে পারে না। আর আল্লাহর পাঠানো দ্বীন ইসলামও আমাদেরকে এই সংকীর্ণতা শিক্ষা দেয়নি।

ইসলাম যেখানে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরকেও সম্মান করতে শেখায় সেখানে আমরা নিজরা নিজেদেরকে সহ্য করতে পারছিনা। আসলে এজাতীয় লোকদের মুখে ঐক্যের কথা খুবই বেমানান। বাস্তবতা হচ্ছে— উম্মাহর ঐক্য নিয়ে মঞ্চ কাঁপানো জ্বালাময়ী ভাষণ দেয়া সহজ কিন্তু পুরো উম্মাহকে আপন করে নেয়া ও আগলে রাখা খুব কঠিন। উদারতা আর ভালোবাসার সীসাঢালা নিখাদ মানসিকতা ছাড়া উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

আসলে, হৃদয়ের প্রশস্ততা— এটা রবের দেয়া এক বিরাট নিয়ামত। সবাইকে আল্লাহ তায়ালা এই নিয়ামতে ধন্য করেন না। প্রশস্ততা, উদারতা এবং ভালোবাসার নিয়ামত লাভে যারা ধন্য— তারা আসলেই মহা সৌভাগ্যবান।