• ১৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

সুনামগঞ্জের পাটলাই নদীর ভয়াবহ নৌ জটে দুর্ভোগ চরমে,সেই সাথে ডাকাত আতংক

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
সুনামগঞ্জের পাটলাই নদীর ভয়াবহ নৌ জটে দুর্ভোগ চরমে,সেই সাথে ডাকাত আতংক
লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ: প্রতি বছরের মত এবারও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের পাটলাই নদীপথে দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার নৌজটের সৃষ্টি হয়েছে। নৌজটের কবলে পড়ে সুলেমানপুর বাজার থেকে বোয়ালমার এলাকা পর্যন্ত মাসাধিককাল   ধরে সব ধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এতে শত শত কয়লা ও চুনাপাথর বহনকারী নৌযানের চালক ও শ্রমিকেরা পড়েছেন বিপাকে। অপরদিকে পরিবহন খরচ বাড়ার আশঙ্কায় লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছেন এসব নৌযানের মালিক, কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও নতুন করে দেখা দিয়েছে ডাকাত আতংক।  রাতের আঁধারে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে কয়লা ও চুনা পাথর লুট করে নিচ্ছে।  বাধা দিলে মারধরের শিকার হচ্ছেন।

ভুক্তভোগীরা বলছেন,সুনামগঞ্জ  জেলার তাহিরপুর উপজেলার সুলেমানপুর বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিমে নদীটির ২০০ ফুট স্থান এস্কেভেটর দিয়ে খনন করলে দীর্ঘ এই নৌজট সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতো। তাছাড়া বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢল না হলে এ সমস্যা আরও দীর্ঘতর হয়। কিন্তু  বিগত ২০ বছর ধরে নাব্যতা সংকটের সমস্যা নিরসনে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।

জানা গেছে, প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। এ কারণে বছরের এই সময়টাতে যেন নিয়ম করে নৌজটের সৃষ্টি হয়। ভারত থেকে আমদানি করা কয়লা ও চুনাপাথর উপজেলার বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন থেকে পাটলাই নদীপথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হয়ে থাকে। কিন্তু পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণে বোয়ালমারা থেকে পুকুরার মুখ পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার নদীপথে শতাধিক নৌযান আটকে থাকায় চরম দুর্ভোগ পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নৌকার মাঝিরা জানান এই দুর্গম হাওরাঞ্চলে দিনে রাতে নৌকা বোঝাই মালামাল নিয়ে চরম অনিরাপদ

অবস্থার মধ্যেই থাকতে হয়। নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলেও জানান।
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ নদীর খনন কাজ করা হয় কিন্ত সরকার যেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব
পায় সেই পাটলাই নদীর খনন হয় না বছরের পর বছর।  প্রতি বছর নৌ জট শুরু হলে শুধু আশ্বাস প্রদান করেন কিন্ত কাজের  কাজ কিছুই হচ্ছেনা।
ফলে ঐ এলাকার কয়লা ও চুনা পাথর ব্যবসায়ীদের
অপুরনীয় ক্ষতি হচ্ছে।
সম্প্রতি এ সমস্যা নিরসনে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, পাটলাই নদীপথে নাব্যতা সংকটের কারণে সৃষ্ট নৌজটে চালক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা যেন কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনার মুখে না পড়েন এ বিষয়টিতে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে।
এছাড়াও ডাকাত দলের আক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আলহাজ্ব আলকাছ উদ্দিন খন্দকার জানান প্রতি বছর এই সময়ে পাটলাই নদীতে তীব্র নৌ জটের সৃষ্ট
হয়। এতে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়। অবিলম্বে
নদীর তলদেশ খনন জরুরী । না হলে ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ ও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন সেই সাথে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হবে।
 পাটলাই নদীতে সৃষ্ট নৌজট পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, নদীর নাব্যতা সমস্যা নিরসনে হাওর এলাকায় স্থায়ীভাবে ড্রেজার বেইজ করা হবে। সেখানে লং বুম এস্কেভেটরসহ যাবতীয় আধুনিক খনন যন্ত্রপাতি থাকবে।