• ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সুনামগঞ্জে অনিয়মের সংবাদ প্রচারের জেরে যমুনাটিভির সাংবাদিক আমিনুলের উপর হামলা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত মে ৪, ২০২৩
সুনামগঞ্জে অনিয়মের সংবাদ প্রচারের জেরে যমুনাটিভির সাংবাদিক আমিনুলের উপর হামলা

 

বিশেষ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রচারের জেরে যমুন টিভির জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’ পত্রিকার চীফ রিপোর্টার আমিনুল ইসলামের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মুল গেইটের সম্মুখে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়।


জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ যমুনা টেলিভিশনে প্রচারের পর স্থানীয় কিছু লোকজন ক্ষুদ্ধ হইয়া সন্ত্রাসী হামলা চালায় সাংবাদিক আমিনুলের উপর। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদের মুল গেইটের পাশে হামলার ঘটনাটি ঘটে। আহত সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম জানা, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপলের সাথে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানে অনিয়ম তদন্তটিমের কাছ থেকে শহরে ফেরার পথে নামিয়ে দেয়ার পর অন্য একটি মোটরসাইকেলে জেলা শহরে যাওয়ার পথে সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান সজিবের নেতৃত্বে কয়েকজনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র তার পথরোধ করে হামলা চালায়। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আমিনুল আরও জানায়, প্রথমেই তার শরীরের আঘাত করে জিল্লুর রহমান সজিব। পরবর্তীতে সবাইকে তাকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করিয়া গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তৃব্যরত চিকিৎসক। সাংবাদিক আমিনুল আহত হওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে।
সাংবাদিক আমিনুল আহত হওয়ার ঘটনার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল ২৮ এপ্রিল যমুনা টেলিভিশনে ‘রড ছাড়াই ঘর তৈরি আশ্রয়ণ প্রকল্পে! ধরা পড়লো যমুনার ক্যামেরায়’ শিরোনামে নিউজ প্রচারিত হয়েছিল। সেখানে ঘর নির্মাণে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে লালপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণস্থলে সাক্ষ্য দিতে যান সাংবাদিক আমিনুল। সেখান থেকে ফেরার পথে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে এলে তার ওপর হামলা করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা।
ঘটনার পর পরই সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম খাঁন, সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা আহত সাংবাদিক আমিনুল ইসলামকে দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটে যান ।

ফেইসবুকে নাজমুল হাসান নামের আইডি থেকে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সময়ের সাহসী সন্তান আমার সহকর্মী যমুনা টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম আজ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। এই আঘাত নিশ্চয় অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বারুদ হয়ে ফিরে আসবে। দ্রুত আমিনুল ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করছি।

সালেহীন চৌধুরী’র ফেইসবুক আইডিতে লুটেরাদের এত স্পর্ধা! প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে সুনামগঞ্জে যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের উপর হামলা।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক খায়রুল হুদা চপল ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা নেই জানিয়ে বলেন, লালপুর আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা থেকে আমিই তাকে আমার গাড়ী করে নিয়ে এসেছি। তাকে গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা করেছি। ছাত্রলীগের সভাপতি এ ঘটনায় জড়িত আমার জানা নাই। যুবলীগ কর্মী সজিবের বাড়ী কোথায় জানতে চাইলে তিনি জানান সজিব শহরের তেঘরিয়ার এলাকার বাসিন্দা।

সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দাখিল করা হয়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।(সূত্র:দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা)