• ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সুনামগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশাবাদ,হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৩০, ২০২৩
সুনামগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশাবাদ,হাওরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু
লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা। তবে হাসি নেই ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষিদের মুখে।

ব্লাস্ট রোগে জেলার কিছু   জমির বোরো ধানের শীষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। বছরের একমাত্র ফসল নষ্ট হওয়ায় ভারাক্রান্ত কৃষকদের মন।
স্থানীয়রা জানান, আগাম পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় ফসলের ক্ষতিরোধে এবার সুনামগঞ্জের  ১১ উপজেলায় ২০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে১০৮৪ টি পিআইসির মাধ্যমে  ৭৪৫ কিলোমিটার  ফসল রক্ষা  বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ১১ উপজেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তাতে অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে  ১৩ লক্ষ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ধান। ১৪৫টি হাওরে প্রায় ৪ লাখ কৃষক বোরোধান চাষ করেছেন।

এছাড়াও আউশ ও আমন থেকেও আরও আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে। জেলার খাদ্য চাহিদা পূরণ করেও অর্থাত ৬লাখ মেট্রিক টন রেখে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ধান উদ্বৃত্ত থাকবে এমন আশাবাদ কৃষি বিভাগের। উৎপাদিত ধানের বাজার মূল্য ৩ হাজার ৮শ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ভাল ফলন হবে। তবে কিছু ফসল নষ্ট হলেও খুব কম। তিনি আরও জানান জেলার হাওর গুলোর এভারেজ ধান কর্তন হয়েছে ৬৭ ভাগ। এর মধ্যে হাওরে ৮৩ ভাগ এবং নন হাওরে ২০ ভাগ।  এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪৯ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।  এবার সুনামগঞ্জ জেলার কোথাও কোন শ্রমিকের সংকট নেই।  অনেক ধান কাটার হারভেস্টার মেশিন মাঠে আছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়ার অবস্থা ভাল থাকায় কৃষক গণ কোন শঙ্কা ছাড়াই ধান কর্তন করছেন।  বেশিরভাগ ধান কর্তন হয়েছে বাকী গুলোও খুব শীঘ্রই কর্তন হয়ে যাবে।
আমরা সার্বক্ষণিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। সকল ইউএনও দের ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।
জেলার সদর উপজেলার মোল্ল  পাড়া ইউনিয়নের  দরিয়াবাজ গ্রামের গ্রামের কৃষক মঙ্গল মিয়া জানান,  হাওরে চাষ করা অনেক জমির ধান ব্লাস্ট রোগে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। একই এলাকার কৃষক জৈন উদ্দিন জানান,  এ রোগে (ব্লাস্ট) আক্রান্ত হয়ে তার বেশির ভাগ ধানই নষ্ট হয়ে গেছে।

। যে কারণে তারা  আর আগামী দিনে আগাম ফসল তোলার আশায় ব্রি-২৮ ধান চাষ করবেন না বলেও জানান।
তারা আরও বলেন এবার ব্রি-২৯ ধানসহ অন্য ধানের ফসল খুবই ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ধানকাটা  পুরোপুরিই শুরু করেছি। অর্ধেক জমির ধান কেটে ফেলেছি। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে বাম্পার সোনালি ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।

মধ্য নগর উপজেলার চেয়ারম্যান সঞ্জীব তালুকদার টিটু জানান হাওর এলাকার মানুষ ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার পুর গ্রামের পাবেল মিয়া জানান বৃহত্তম শনির হাওরের ফসল ও কাটা শুরু হয়েছে।  কিছু ২৮ জাতের ধান ক্ষতি হয়েছে তবুও বাম্পার ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খরচার হাওরের বাসিন্দা সপন কুমার বর্মন বলেন এবার ধান কাটার মেশিন পর্যাপ্ত থাকার কারণেই শ্রমিক সংকট নেই। মেশিন দিয়ে দ্রুত ধান কাটা হচ্ছে। ফলে এবার জেলা বাসী সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন নির্বিঘ্নে। তবে কোন কোন জায়গাতে শিলা বৃষ্টি ও চিটায় কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে।  এছাড়াও বজ্রপাতের কারণে কৃষক মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন।  ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৬ জন কৃষক ধান কাটাতে গিয়ে মারা গেছেন ।