• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় ছাতকের ভূমিখেকো চক্র 

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় ছাতকের ভূমিখেকো চক্র 

 

ছাতক থেকে সংবাদদাতা:ছাতক পৌরশহরের মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উটছে একটি ভূমি খেকো চক্র। চক্রটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা ও সংবাদ সম্মেলনে ভূয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে ছাতক পৌরসভার বাগবাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ি মহল্লার মরহুম শাহ উসমান মিয়ার নাতি, মৃত আলতাব মিয়ার ছেলে ও মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক ইকবাল হোসেন।

ইকবাল হোসেন বলেন, তার দাদী মরহুমা ছুরতুন নেছা বিবি ও চাচা মরহুম সুরুজ মিয়া পৌরসভার বাগবাড়ি মৌজাস্থিত এসএ ৫৮নং খতিয়ানের ৮৮০ নং দাগের ২য় তলায় মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি ও তার পরিবার দ্বারা কেন্দ্রটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গত ৮ জানুয়ারী উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের ভূমি খেকো আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী কর্তৃক মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভূমিদাতার উত্তরাধীকারি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এবং তার পরিবারকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করেছেন। এ জন্য তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, তার দাদা মরহুম শাহ উসমান মিয়া ছিলেন একজন ধর্মভীরু, দানশীল ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ১৯৪১ সালে তিনি মারা যান। এর আগে (দলিল নং-২০৩১/১৯৪১) তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের একটি দানপত্র দলিল সৃজন করে গেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, তার বাড়ির সামনে বাগবাড়ি মৌজার ৫৮ নং খতিয়ানে ও ৮৮০ নং দাগে ২য় তলায় তৎকালিন সময়ে অস্থায়ী ভাবে মাদরাসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাশাপাশি ছাতক জালালিয়া আলিয়া মাদরাসা হওয়ায় এটি বিলুপ্ত হয়। পরবর্তীতে চাচা মরহুম সুরুজ মিয়া এখানে মোহাম্মদিয়া মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠা করেন। মুসাফির খানা ও মাদরাসা বিলুপ্তি হওয়ার কারণে ২০০১ সাল থেকে এখানে মোহাম্মদিয়া আরবী শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালিত হয়ে আসছে। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।

দীর্ঘ ৮০ বছর পর ভূমি খেকো আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ার কারণে ওই স্থানে মসজিদ ছিল বলে বিচার সালিশ চলমান অবস্থায় কাল্পনিক ও দুইটি মিথ্যা মামলা (নং-স্বত্ব ৬৫/২২ ও ৫৪০/২২ইং) আদালতে দায়ের করেছেন। মরহুমা ছুরতুননেছা বিবি খতিয়ান নং-৫৮, দাগ নং-৮৮০তে রেজিষ্ট্রারী ওয়াকফ দলিল সম্পাদন করে দেননি। ওই ভূমি খেকোর দাবীকৃত দলিল নং-৪১৭২/১৯৪৭ইং। বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, আমি ও আমার পরিবারের সকলের সম্মতিতে নিজ অর্থায়নে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নতূন ভবন নির্মাণ করে এখানে আবারও আরবী শিক্ষা কেন্দ্র ও দুই ঈদে মরহুমা দাদীর দানকৃত ঈদগাহে নামাজের জন্য প্যান্ডেল পরিচালনা করতে ইচ্ছুক।

সংবাদ সন্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন বুলি, মাস্টার সোনাহর আলী, দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্স প্রমুখ। এসময় মীর মনির মিয়া, আব্দুল মুক্তাদির, সোনাফর আলী, মিরাজ মিয়া, মোজাই মিয়া চৌধুরী, ইকবাল মিয়া, মর্তুজা মিয়া, বাদল মিয়া, উকিল আলী, সাদমান আহমদ সানি, হুমায়ুন আহমদ, সোলেমান মিয়া, রহিম আলী, খলিলুর রহমান মানিক, এতরাজ মিয়া, খোকন মিয়া, সুরুজ আলী মেম্বার, চাঁদ মিয়া, জয়নাল মিয়া, আনোয়ার হোসেন, শাওন, সোহেল, জাকারিয়া, আব্দুল আউয়ালসহ বাগবাড়ি গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।

গ্রামের লোকজনরা বলেন, প্রায় ৮০ বছর আগে শহরের ঐতিহ্যবাহী মোহাম্মদিয়া আরবি শিক্ষা কেন্দ্রটি দখল করতে চায় একটি ভুমিখেকো চক্র। কর্তৃপক্ষ অতি পুরনো ওই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কার করতে চাইলে শিমুলতলা গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীসহ একটি পক্ষ মোহাম্মদিয়া আরবি শিক্ষা কেন্দ্রের ভবন ও জমির মালিকানা দাবি করে। জমি দখলে নিতে তারা বাগবাড়ি গ্রামের ইকবাল হোসেন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ২ টি মামলা দায়ের করে হয়রানি করে যাচ্ছে। ওরা একটি ভূয়া ওয়াকফ দলিল মুলে ভূমি দাবি করছে। এতে গ্রাম ও এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়েছেন। দায়েরি বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার ও উসমান মিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধের দাবি জানান গ্রামবাসী।