• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

আইএসব বধূ শামীমাকে যৌন শোষণের জন্য সিরিয়ায় পাচার করা হয়েছিল,মামলায় নতুন মোড়

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত নভেম্বর ২৩, ২০২২
আইএসব বধূ শামীমাকে যৌন শোষণের জন্য সিরিয়ায় পাচার করা হয়েছিল,মামলায় নতুন মোড়

বিবিএন ডেস্ক:আইএসব বধূ হিসেবে পরিচিত শামীমা বেগমের বৃটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার মামলা নতুন মোড় নিয়েছে।  তার আইনজীবীরা এখন বলছেন, শামীমা মানবপাচার এবং যৌন শোষণের শিকার হয়েছেন। তিনি নিজেই একজন ভিক্টিম, তাই তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ হতে পারে না। সোমবার যুক্তরাজ্যের ‘স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশন’ (এসআইএসি)-এ শামীমার আইনজীবীরা ওই যুক্তি তুলে ধরেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়, ২০১৯ সালে বৃটেনের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার বৃটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। তবে শামীমার আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেন, শামীমা পাচারের শিকার হওয়া শিশু ছিলেন কিনা সে বিষয়টি সেসময় বিবেচনা করা হয়নি।  ফলে তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তটি বেআইনি। শামীমা বেগমকে মূলত যৌন শোষণের জন্য আইএস পাচার করে নিয়েছে। এর পক্ষে অকাট্য প্রমাণ আছে বলে জানান আইনজীবীরা। তারা আরও বলেন, যেসব প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে শামীমা যে মানবপাচারের শিকার একজন শিশু ছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু তার পরেও জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তাকে তার বৃটিশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে পূর্ব লন্ডন থেকে আরো দুই কিশোরীর সঙ্গে পালিয়ে সিরিয়া গিয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস)- এ যোগ দেন শামীমা বেগম। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। বর্তমানে ২৩ বছরের শামীমা উত্তর সিরিয়ায় সশস্ত্র রক্ষীদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি শরণার্থী শিবিরে আছেন। সিরিয়ায় আইএস উৎখাত অভিযানে আশ্রয় হারিয়ে শামীমার ওই শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই হয়। ২০১৯ সালে সেখানে প্রথম তার খোঁজ মেলে। সেখানে তার একটি সন্তানও হয়েছিল, যে পরে মারা যায়। শামীমা জানিয়েছেন, এটি তার তৃতীয় পুত্র। তার আগে আরো দুইটি সন্তান হয়েছিল, দুজনই মারা গেছে।

২০১৯ সাল থেকেই শামীমা দেশে ফেরার আবেদন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে ওই সময়ে বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার দেশে ফেরায় বাধা দেন। শামীমার দেশে ফেরার পথ চিরতরে বন্ধ করতে তার বৃটিশ নাগরিকত্বও কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর শামীমা তার আইনজীবীর মাধ্যমে বৃটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন। শামীমার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, বৃটিশ সরকার ‘অবৈধভাবে’ তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

তাছাড়া, বৃটেনে ফিরতে না পারলে শামীমার পক্ষে আইনি লড়াইও ঠিকমত চালানো সম্ভব নয়। কারণ, সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে শামীমা তার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে কিংবা ভিডিও কলের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিতে পারছেন না। ২০২০ সালের জুলাইয়ে আপিল আদালত তাদের রায়ে জানায়, শামীমাকে সুষ্ঠু শুনানি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সিরিয়ার ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় তার পক্ষে আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই তাকে বৃটেনে ফেরার অনুমতি দেয়া উচিত। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বিবিসি-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শামীমা বেগম বলেছিলেন, আইএসে যোগ দেয়ার কারণে তিনি অনুতপ্ত এবং এ কাজের জন্য তিনি সারা জীবন অনুতপ্ত থাকবেন। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৃটেনের ‘লড়াইয়ে’ সাহায্য করার প্রস্তাবও দেন।