নিহত জোৎস্না জগন্নাথপুর থানার নারকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরকু মিয়ার স্ত্রী।
মুক্তা ধর বলেন, ওষুধ কেনার সুবাদে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সঙ্গে শাহনাজ পারভীন জোৎস্নার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। জোৎস্না কিছুদিন ধরে শারীরিক গোপন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি জিতেশ জোৎস্নার মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যায়। তখন জোৎস্না তার গোপন সমস্যার কথা জিতেশকে জানালে সে তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলে। ওইদিন বিকেলে জোৎস্না জিতেশের দোকানে গেলে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে তাকে অপেক্ষা করতে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। এদিকে রাত গভীর হলে জোৎস্নার বাসায় যাওয়ার কথা বললে জোৎস্নাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেয় জিতেশ। এতে তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তখন জিতেশ তার দুই সহযোগী অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত গোপকে নিয়ে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। এরপর রাত গভীর হলে আশপাশের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তখন জিতেশ ও তার দুই সহযোগী এনার্জি ড্রিংকস পান করে জোৎস্নাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি জোৎস্না তার পরিবারকে জানাবে বলে জানান। তখন জিতেশ ও তার সহযোগীরা জোৎস্নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ওই ফার্মেসিতে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে জোৎস্নার দুই হাত, দুই পা ও বুক-পেটসহ ছয় টুকরা করে। এরপর দোকানে থাকা ওষুধের কার্টন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে তারা ফার্মেসি তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই মরদেহের খণ্ডিত অংশ পাশের একটি মাছের খামারে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু ভোর হয়ে যাওয়ায় ও লোকজন চলে আসায় তারা সেই কাজটি করতে পারেনি।
এই ঘটনার পর সিআইডির এলআইসি শাখার একাধিক দল আসামিদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা থানার নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জগন্নাথপুর থানার পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনজিৎ ও অসীত গোপকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতার জিতেশ চন্দ্র গোপ কিশোরগঞ্জ জেলার ইতনা থানার শহিলা গ্রামের যাদব চন্দ্র গোপের ছেলে, অনজিৎ চন্দ্র গোপ একই এলাকার রসময় চন্দ্র গোপের ছেলে এবং অসীত চন্দ্র গোপ নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার সুয়াইর অলিপুর গ্রামের পতিত পবন গোপের ছেলে।