• ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নব্য রাজাকারের’ জবাবে ‘নব্য ভারতীয় দালাল’!

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৪, ২০২০
নব্য রাজাকারের’ জবাবে ‘নব্য ভারতীয় দালাল’!

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় হেফাজতে ইসলাম ‘নতুন রাজাকারের ভূমিকায়’ বলে মন্তব্য করেছেন৷ জবাবে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, এসব কথা যারা বলেন তারা নব্য ভারতীয় দালাল৷

ইসলামাবাদী আরো বলেন, দাবি না মানলে ‘মাঠেই ফয়সালা হবে৷’

হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল করীম ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার দাবি তোলার পরও পরিস্থিতি তত উত্তপ্ত হয়নি৷

কিন্তু কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে৷ এই ঘটনায় দুইজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও দুইজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকার কোনো ছাড় দেবে বলে মনে হচ্ছে না৷ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো আগেই মাঠে নেমেছে৷ আন্দোলনে নেমেছে অনেক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনও৷ সর্বশেষ বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তারা মাঠে নেমে প্রতিবাদ করেছেন৷ তারা বলেছেন, ‘‘কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর অবমাননা সহ্য করা হবে না৷’’

আর সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘‘তাদেরকে আমরা কী বলি? তাদেরকে আমরা কী ডাকি? তাদেরকে আমরা রাজাকার ডাকি৷ একাত্তরে ছিল জামায়াত আর এখন হেফাজতও সেই নতুন রাজাকার হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷’’

তিনি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আরো বলেন, ‘‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তারা সাহস করেছে জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার৷ জাতির জনকের ওপর হামলা করাটা কী? এটা হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার চেতনার ওপর হামলা৷ আমাদের স্বাধীনতার চেতনার ওপর হামলা কারা করেছে, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে

এর জবাবে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিুলল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা অভিযোগ৷ আমরা যদি পাল্টা অভিযোগ করি যে, ওরা হচ্ছে নব্য ভারতীয় দালাল৷ ওরা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আলেম ওলামাদের রাজাকার বলছে৷ আমরা বলব তারা দেশের শত্রু৷ একটি কুচক্রী মহল দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার জন্য উস্কানি দিচ্ছে৷ মি. জয় এই উস্কানি আরো বাড়াতে একথা বলছেন৷’’

হেফাজতে ইসলাম অবশ্য এরইমধ্যে তাদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আবেদন করেছে৷ তবে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান দলটির এই নেতা৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন দেখা করতে চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ভাস্কর্য আর মূর্তি একই জিনিস৷ এগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে৷ আমাদের দাবিদাওয়া আমরা রাষ্ট্রের কাছে জানাব৷ প্রধানমন্ত্রী যেহেতু রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করেন তাই তার সাথে দেখা করতে চাই৷’’

তিনি বলেন, ‘‘শরিয়তের বিধানের ব্যাপারে কোনো আপোষ নয়, কোনো ছাড় নয়৷ সরকার যদি দাবি না মানে তাহলে মাঠে ফয়সালা হবে৷”
তবে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী রবিবার মারা যাওয়ায় এই সপ্তাহে নতুন কর্মসূচি দেয়ার কথা থাকলেও তা দিচ্ছেনা হেফাজত৷

নানা পর্যায়ে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকার ও আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেবে না৷ এটাকে তারা চরম আঘাত মনে করছে৷ তাই হেফাজতের দাবি মেনে নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ এমনকি সহজে তারা প্রধামন্ত্রীর দেখাও পাবে না৷ নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী৷ যে কেউ তারা সাথে দেখা করতে চাইতে পারেন৷ কিন্তু দেখা করবেন কিনা সেটা প্রধানমন্ত্রীর বিষয়৷’’

তিনি বলেন, অতীতেও তারা অনেক আস্ফালন করেছে৷ তাতে কাজ হয়নি৷ তারা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়৷ কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন সফল হবে না৷ এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনো জায়গা নেই৷ সজীব ওয়াজেদ জয় ঠিকই বলেছেন, তারা নব্য রাজাকার৷
দাবি মানা না হলে মাঠেই ফয়সালা হবে হেফাজতের এমন হুমকির জবাবে তিনি বলেন, হেফাজত কি বলে তা আমলে নেয়ার কোনো দরকার নাই৷ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কী বলে সেটাই আমলে নিতে হবে৷