ছাতক প্রতিনিধি:
ছাতকের বিতর্কিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম মাহবুব রহমানকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন-১) ও উপ সচিব তাসনুভা নাশতারান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ছাতকের পিআইও কে এম মাহবুব রহমানকে ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলায় বদলি করা হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে ২ জুনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করলে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য করা হবে।
জানা যায়, ছাতকে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুষের টাকা হজম করতে এক সপ্তাহ লাপাত্তা ছিলেন পিআইও কেএম মাহবুব রহমান। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি না নিয়ে গত ১৭ মে থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় সেবা ব্যাহত হয়। কাজ করে টাকা না পাওয়ায় চরম ভাবে ক্ষোব্ধ প্রকল্প কমিটির সদস্যরা। সরকারি খরচ দেখিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ঘুষের টাকা। প্রকল্প কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ইউএনও বরাবরে একাধিক অভিযোগও করেছেন।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে যোগদান করেন কেএম মাহবুব রহমান। যোগদানের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদেরদের মাধ্যমে গড়ে তুলেন সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সম্প্রতি কাজ না করে অসংখ্য প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিস্তর অভিযোগ ওই পিআইওর বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর এখানে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রকল্পের ঘুষের টাকায় নিরবে করেছেন সম্পদ।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠে ওই পিআইও’র বিরুদ্ধে। তিনি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি ১৪ মে পর্যন্ত ট্রেনিংয়ে ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত দায়িত্বে পালন করেন দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান। তিনিও দুই মাসে বিভিন্ন প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে সরকারি খরচের নামে নিয়েছেন ঘুষ। এ ঘুষের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছাতক ও দোয়ারার দুই পিআইও এর মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়।
গত ১৬ মে সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ছাতকের পিআইওকে ব্যক্তিগত ভাবে বাসায় ডাকেন ইউএনও। উপস্থিত ছিলেন ছাতক পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামও। প্রকল্পের কোন ধরণের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ছাড় দেওয়া হবেনা বলে পিআইওকে সাফ জানিয়ে দেন ইউএনও। এর পরদিন ১৭ মে অফিস করেননি পিআইও কেএম মাহবু্ব রহমান।