বিবিএন ডেস্ক: রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বনশ্রী ও খিলগাঁও থেকে ক্রিস্টাল মেথ (আইস) সেবন ও বিক্রির অভিযোগে ১০ তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
তারা হলেন রুবায়াত (৩২), মোঃ রোহিত হোসেন (২৭), মাসুম হান্নান (৪৯), মোঃ আমান উল্লাহ (৩০), মোহাইমিনুল ইসলাম ইভান (২৯), মুসা উইল বাবর (৩৯), সৈয়দা আনিকা জামান ওরফে অর্পিতা জামান (৩০), লায়লা আফরোজ প্রয়া (২৬) , তানজীম আলী শাহ ও মো হাসিবুল ইসলাম (২২)। তাদের কাছ থেকে পাঁচ শ’ গ্রাম আইস ও পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তেজগাঁও এ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফজলুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দশ সদস্যের এ দলটির প্রত্যেক সদস্যই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। কেউ কেউ বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানাচ্ছে, পাঁচ শ’ গ্রাম আইস থেকে এক লাখ ইয়াবা তৈরি করা সম্ভব। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে আজ শনিবার ভোর ৪টা পর্যন্ত অধিদফতর এই অভিযান চালায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আটটি মামলা করবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষায়িত এ সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ হলো, এই মুহূর্তে ইয়াবার চেয়ে তারা অভিযানে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস পাচ্ছে বেশি। এটি দেখতে তালমিছরির মতো এবং এক গ্রাম আইস দিয়ে পাঁচ শ’ ইয়াবা তৈরি করা সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা অভিভাবকদের অনেকেই এখনো ক্রিস্টাল মেথ বা আইস চেনেন না। আর কাঁচামাল নিয়ে এসে ইয়াবা তৈরি করা সহজ। এ দুই কারণে ক্রেতা–বিক্রেতাদের একটা অংশ এখন ইয়াবার চেয়ে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস সংগ্রহে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তারা বলছে, ঢাকায় ক্রিস্টাল মেথ বা আইসের কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করে সাত-আটজনের একটি দল।
সেই দলের একজন সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন। তার এই গ্রেফতার অভিযানকে সহজ করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর প্রথমে একটি ফোন নম্বর পায়, সেই নম্বরের সূত্র ধরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযানগুলো চালানো হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, প্রায় এক মাস চেষ্টার পর দলটি তাদের জালে ধরা দেয়। তাদের মধ্যে প্রথমে বনানী থেকে গ্রেফতার হন রুবায়াত, রোহিত হোসেন ও বাবর। রোহিত মালয়েশিয়া থেকে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা পড়ে দেশে ফিরেছেন। তার বাবার একটি মার্কেট রয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন রোহিত। তারা তিনজন বনানীতে মুসা উইল বাবরের ভাড়া ফ্ল্যাটে নিয়মিত মাদক সেবন ও কেনাবেচার কাজ করছেন।
তিনি বলেন, তাদের প্রত্যেকের সাত-আটজন করে বাঁধা ক্রেতা আছে। তারা এক গ্রাম আইস ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় কেনাবেচা করতেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেমিস্ট শফিকুল ইসলাম সরকার জানান, ক্রিস্টাল মেথ বা আইস ইয়াবার চেয়ে ২০ গুণ শক্তিশালী।