নিজস্ব প্রতিনিধি, জগন্নাথপুর থেকেঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর সভার চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারি ভাবে জয়লাভ করে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। এদিকে সন্ধ্যায় ১১ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া নৌকা প্রতীকে ৬১৫৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন সেলিম জগ প্রতীকে ৩৮৮১, ধানের শীষ প্রতীকে রাজু আহমেদ ১০৩৯ এবং মোবাইলফোন প্রতীকে আবিবুল বারী আয়হান ১০১৬ ভোট পেয়েছেন।
তবে প্রার্থীদের সমর্থক ও প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন এবং বিএনপির প্রার্থী রাজু আহমদ বলেন, সরকার দলের লোকজন আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। তাই এ নির্বাচন আমি বর্জন করেছি।
স্বতস্ত্র প্রার্থী আবুল হুসাইন সেলিম বলেন, আমার বিজয় সুনিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ইকড়ছই, ভবানীপুর. আর্দশ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের আব্দুর রশিদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে ব্যাপক জাল-ভোটের মাধ্যমে কারচুপি করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচন বর্জন করেছি।
তবে নির্বাচনে অপর দুই মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবিবুল বারী আয়হান বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগ করায় তাঁরা ভোটারদের নিকট কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
নির্বাচন সহকারী রিটার্নিং অফিসার জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে আমাদের নিকট লিখিত অভিযোগ করেননি কোন প্রার্থী। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সর্বশেষ জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে আবদুল মনাফ মেয়র নির্বাচিত হন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি মেয়র আবদুল মনাফ মৃত্যুবরণ করলে ফেরুয়ারি মাসে জগন্নাথপুর পৌরসভার উপ নির্বাচনসহ তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ মার্চ ভোটগ্রহনের সিদ্ধান্ত হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন পত্র দাখিল ৮ মার্চ প্রত্যাহারের দিন ধার্য করা হলে চারজন প্রার্থী সর্বশেষ ভোট যুদ্ধে অংশ নেন।
প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাজু আহমেদ (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবুল হোসেন (জগ) এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আবিবুল বারী (মোবাইল ফোন) প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে প্রচারণায় নামেন।
নির্বাচনের সকল প্রস্তুতির পর ২১ মার্চ বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশনার পৌরসভার মেয়র পদে উপ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। পরে ২১ সেপ্টেম্বর মেয়র পদে উপ নির্বাচন ঘোষণা করা হলে শনিবার (১০ অক্টোবর) ভোটে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রশিদ ভূঁইয়া বিজয়ী হন।