• ১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৩শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গোপালগঞ্জের হামলায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ১৮, ২০২৫
গোপালগঞ্জের হামলায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে,  নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫

বিবিএন নিউজ:

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আরেকজন মারা গেছেন। গত বুধবার আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সী (৩২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে মারা গেছেন।

 

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজন মারা গেলেন। এর আগে এ ঘটনায় নিহত হন, গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গিপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১) ও সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন (২৪)।

 

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও দুজন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁরা হলেন, সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০) ।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে রমজান আলী মুন্সীর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর থানাপাড়ায়। তিনি মৃত আকবর মুন্সীর ছেলে। রমজান আলী রিকশাচালক ছিলেন।

 

আহত অবস্থায় রমজান মুন্সীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন তাঁর ভাই হীরা মুন্সী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর ভাই রিকশাচালক। ঘটনার দিন গত বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ সদর এলাকায় সিনেমা হলের পাশেই রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে তিনি সহিংসতার মধ্যে পড়েন এবং গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই দিবাগত রাত ২ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম বলেন, রমজান মুন্সীর মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।

 

গত বুধবার দিনভর দফায় দফায় গোপালগঞ্জে হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

 

১ জুলাই থেকে সারা দেশে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল গোপালগঞ্জে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ঘোষণা করেছিল এনসিপি। এই কর্মসূচি ঘিরে সকাল নয়টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত চার দফায় হামলা চালান কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সদর উপজেলার কংশুরে পুলিশ সদস্য ও তাঁদের গাড়ি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), শহরের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন ও জেলা কারাগার চত্বরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনাগুলো ঘটে। এ সময় বিভিন্ন স্থাপনা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়।

 

উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে সমাবেশস্থলে মঞ্চ ভাঙচুর ও হামলা চালান আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে সমাবেশ শেষে বেলা পৌনে তিনটার দিকে ফেরার সময় হামলার শিকার হন এনসিপির নেতারা।

 

বিকেল পাঁচটার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সহায়তায় গোপালগঞ্জ ত্যাগ করে এনসিপির নেতারা। গত বুধবার রাত আটটা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউয়ের সময় আজ শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তিন ঘণ্টা শিথিল করে দুইটা থেকে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত কারফিউয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে।