ডেস্ক নিউজঃ দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উন্মাদনা বাড়ছে। আর মাত্র কিছুদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসর কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হচ্ছে গ্রেটেস শো অন আর্থ। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের মাঠের লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে কোটি কোটি ফুটবলভক্ত। বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে কাতারে জড়ো হবেন ১২ থেকে ১৪ লাখ মানুষ। আরবজাতিকে এমনিতেই ফুটবলপাগল জাতি হিসেবে চেনে সবাই। এর মধ্যে সৌদি আরবের নামডাক বেশ পুরনো। আর তাই এবার কাতার বিশ্বকাপে মুসলিম দর্শকদের জন্য ব্যতিক্রমী ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। টুর্নামেন্টের সময় বিনা খরচে ওমরাহ পালন এবং মদিনায় যাওয়ার ভিসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। সেইসাথে বিনা খরচে পাবেন ওমরাহ পালনের সুযোগ। তবে হায়া কার্ডধারীদের (ম্যাচের টিকিটধারী) থাকতে হবে স্বাস্থ্যবিমা।
আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে প্রবাসীদের মৃত্যু। কারণগুলোর মধ্যে অধিকাংশই দুর্ঘটনা এবং ব্রেইন স্ট্রোক। তবে সম্প্রতি হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সংখ্যাও আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। এজন্য পরিবার পরিজন থেকে দূরে থাকার ফলে সৃষ্ট মানসিক অবসাদকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রবাসীদের মানুষিক স্বাস্থ্য নিয়ে সরকারের ভাবা উচিৎ বলে মনে করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। সোমবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স রুমে প্রবাসী কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। যদি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এক ডলার ব্যয় করা হয় তাহলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে পাঁচ ডলার ফেরত আসবে। জিডিপির প্রবৃদ্ধির জন্য হলেও আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হবে। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। যদি বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সেবা লাগে তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন প্রবাসী কর্মীর। কারণ আমরা পরিবারের কাউকে না কাউকে বলতে পারলেও এই মানুষগুলোর বলার কেউ থাকে না। তিনি আরও বলেন, এই যে এক কোটি মানুষ দেশের বাইরে থাকেন, সারাদিন কাজ করে যখন ঘুমাতে যান, তখন তার মনে হয় তিনি একা। এই যে একা ঘুমানোর চাপে গত ১৪ বছরে ৪০ হাজার মানুষ প্রবাসে মারা গেছেন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ব্রেইন স্ট্রোকে। সেই মানুষটা একা, নিঃস্ব এই জিনিসটা ঘুমের মধ্যে তার স্ট্রোকের কারণ কিনা আমরা জানি না।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিসা বিভাগের সহকারী মহাপরিচালক খালেদ আল-শামারি শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সৌদি ‘আল-এখবারিয়া’ চ্যানেলে বলেছেন, ১১ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের জন্য দেয়া হবে ভিসা। আল-শামারি ঘোষণা করেন, মুসলিম হায়া কার্ডধারীরা ২ মাস পর্যন্ত দেশটিতে থাকতে পারবেন। এর মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি।
তিনি আরও বলেন, কার্ডধারীদের একটি মাল্টি-এন্ট্রি ভিসা দেয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে কার্ডের মেয়াদ থাকার পুরো সময়টিতে যে কোনো সময় তারা সৌদি আরবে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে পারবেন। হায়া কার্ডধারীরা বিনা খরচে সৌদি ইলেকট্রনিক ভিসার এই সুবিধা পাবেন। তবে থাকতে হবে স্বাস্থ্যবিমা বা মেডিকেল ইনস্যুরেন্স।