বিবিএন ডেস্ক:ব্রিটেনে জালিয়াতি করে বসবাসের চেষ্টার দায়ে সাইফুল আলম (৩৮) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিককে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ হাল লাইভ ওপেরা নিউজ।
গত সপ্তাহে সাইফুলকে ব্রিটিশ হাল ক্রাউন কোর্টে হাজির করা হয়। আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটেনের হাল লাইভ ওপেরা নিউজসহ সংবাদপত্রগুলো জানায়, আদালতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন ও জাল পরিচয়পত্র রাখার দুটি অভিযোগে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে।
আদালতকে সাইফুল জানান, তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে। এই শঙ্কা থেকে তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। সাইফুল আরও বলেন, জাল নথিপত্র কেনার সিদ্বান্তটি তার ভুল ছিল। এ জন্য তিনি গভীর অনুশোচনা করছেন। সাইফুল ২০০৪ সালে এক বছরের ভিসায় ব্রিটেনে আসেন।
তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জুলিয়া বাগস আদালতকে জানান, সাইফুল একজন সমকামী। তাই তিনি সামাজিক কুসংস্কার ও সহিংসতায় ভয় পেয়েছিলেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, শুরুতে প্রচুর মানুষ নিজেদের সমকামী দাবি করে ব্রিটেনে অভিবাসন সুবিধা নিয়েছেন। অনেকে গে বা লেসবিয়ানের অধিকারে ব্রিটেনে বসবাসের সুযোগ পেয়ে দেশ থেকে স্বামী বা স্ত্রী এনেছেন। অনেকে নতুন করে বিয়ে করেছেন। এসব কারণে পরে সরকার এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে।
ব্রিটেনে শুধু ২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ যেসব দেশে সমলিঙ্গের সম্পর্ক বা বিয়ে বৈধ নয়, সেসব দেশের কমপক্ষে ৩ হাজার ১০০ জনের গে, লেসবিয়না, বাই সেক্সুয়াল ও ট্রান্সসেক্সুয়াল দাবি করে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আর ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ১৯৭ জন পাকিস্তানি ও ৬৪০ জন এলজিবিটি দাবিদারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে হোম অফিসের পরিসংখ্যানে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনে গত এক দশকে বিপুল সংখ্যক মানুষ নিজেদের সমকামী দাবি ও দেশে ফেরা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। এদের মধ্যে ভারতীয়, বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিরাও রয়েছেন। শুরুতে ব্রিটেনের হোম অফিস ও আদালত সহানুভুতিশীল হয়ে ভিসা দিলেও একপর্যায়ে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর থেকে এমন আবেদন অনুমোদনের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।