ছাতক প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ও নরসিংপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী জোড়াপানি-জয়নগর পয়েন্ট সংলগ্ন প্রথম সেতুটি ভেঙে যাওয়ার চার মাস পার হলেও এখনো তা মেরামত হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন।
ব্রিজটি গত ১১ জুন ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই নোয়ারাই ও নরসিংপুর ইউনিয়নের হাজারো মানুষের একমাত্র যাতায়াতপথ বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে স্থানীয়রা কাঠের ব্রিজ বা অস্থায়ী পথ ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় মানবিক সংগঠন “উত্তর সুরমা ইসলামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, ছাতক” তখনই সেতুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানায়। সংগঠনটি ১৫ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জনাব তারিকুল ইসলামের সম্মতিতে তার অনুপস্থিতিতে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব জয় দেবনাথের নিকট একটি লিখিত দরখাস্ত জমা দেয়।
সংগঠনের সভাপতি জনাব মুরাদ আহমদ ইউএনও’র সঙ্গে ফোনে কথা বলে এলাকার দুর্ভোগের বিষয়টি বিস্তারিত জানান। ইউএনও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং সংগঠনের মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
তবে চার মাস পেরিয়ে গেলেও সেতুটি এখনো মেরামত হয়নি। ফলে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অবশেষে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই ভাঙা সেতুর কাছেই ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নরসিংপুর ইউনিয়নের শ্যামারগাঁও গ্রামের রইছ আলীর ছেলে জয়নাল মিয়া (৪০) মোটরসাইকেলযোগে ছাতকের দিকে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ছোট ভাই আয়নাল মিয়া।
জোড়াপানি-মৌলা এলাকার কাঠের ব্রিজ পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে পিছনে বসা জয়নাল মিয়া গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে ছাতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছোট ভাই আয়নাল মিয়াও গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন।
জনগণের ক্ষোভ ও হতাশা
দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ এখন তীব্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার আবেদন ও অনুরোধের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, এই সেতুটি দ্রুত মেরামত না হলে ভবিষ্যতে আরও প্রাণহানি ঘটতে পারে।
