• ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

রাঙামাটির প্রবাসি কল্যাণ ব্যাংক ব্যবস্থাপকসহ দু’জনের বিরুদ্ধে দূদক’র মামল

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ২৯, ২০২৩
রাঙামাটির প্রবাসি কল্যাণ ব্যাংক ব্যবস্থাপকসহ দু’জনের বিরুদ্ধে দূদক’র মামল

 

|| মুহাম্মদ ইলিয়াস,রাঙামাটি প্রতিনিধি ||

রাঙামাটির প্রবাসি কল্যাণ ব্যাংকের প্রিন্সিপাল এক্সিকিউটিভ অফিসার এইচ.এম. বদরুদ্দৌজা ও তার সহযোগি মুহাম্মদ মনছুর আলমের বিরুদ্ধে জেলা দূদক মামলা দায়ের করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৪/০২/২০১৪ খ্রি: হতে ০৯/০৩/২০১৬ খ্রি: পর্যন্ত সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে তা ব্যবহার করে ভুয়া ঋণ গ্রহীতা ও ভুয়া জামিনদার/গ্যারান্টার সৃজন করে প্রতারণার আশ্রয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক’র রাঙামাটি সমন্বিত কার্যালয়’র সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে বুধবার রাঙামাটির জেলা জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন।
রাঙামাটি জেলা দূর্নীতি দমন কমিশন’র মামলা নাম্বার-১, তারিখ: ২৬/০৭/২০২৩ইং ও রাঙামাটির জেলা জজ আদালতে দায়েরকৃত এই মামলা নাম্বার হলো-৬/২৩।

সূত্র মতে, ব্যবস্থাপক এইচএম বদরুদ্দৌজা তার সহযোগি মুহাম্মদ মনছুর আলমকে নিয়ে ১৪/০২/২০১৪ খ্রি: হতে ০৯/০৩/২০১৬ খ্রি: তারিখে ব্যাংকটি থেকে ৭০ জন প্রবাসীর মাঝে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করেন। তন্মধ্যে মোট ২২ লাখ ৪ হাজার ৩শ ৯৮ টাকা আদায় করা হয়েছে। দূর্নীতি সংক্রান্তে অভিযোগ পেয়ে পৃথকভাবে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অডিট টিম ১১/৭/২০১৭ খ্রি তারিখ থেকে ১৩/০৭/২০১৭ তারিক পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক রাঙামাটি শাখায় বিশেষ নিরীক্ষা করেন। নিরীক্ষাকালে এইচ.এম. বদরুদ্দৌজার বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া জামিনদার/গ্যারান্টার এবং ভূয়া ঋণ গ্রহীতা সৃজন করে ব্যাংটির ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪শ ৭৪ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়।
এমন কি তারা পরস্পর যোগসাজশে জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে তা ব্যবহার করত। ভুয়া ঋণ গ্রহীতা ও ভুয়া জামিনদার/গ্যারান্টার সৃজন করে প্রতারণার আশ্রয়ে নিজে অবৈধভাবে আরও ৩১ লাখ ৬৫হাজা ৬ শ ২ টাকা আত্মসাত করে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক এইচ.এম. বদরুদ্দৌজা স্থানীয় মো: নিজাম উদ্দীন’র পুত্র ওমুহাম্মদ মনছুর আলম চট্টগ্রাম জেলার বাশখালী থানার বৈলছড়ির রফিক আহম্মেদ’র পুত্র।

উল্লেখ্য মুহাম্মদ মুনছুর আলম নিজেই ০৯টি ঋণের জামিনদার হয়েছেন। একই ব্যক্তিকে একাধিক ঋণের জামিনদার বানিয়ে ঋণ প্রদান করা ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন মর্মে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়। আসামী মুহাম্মদ মনছুর আলম বিভিন্ন ঋণ কেসে উল্লিখিত জামিনদারদের সহযোগিতায় সিন্ডিকেট তৈরি করে বাঁশখালী এলাকা হতে কিছু লোক জোগাড় করে প্রত্যেকের নিকট হতে অতিরিক্ত চেক জমা নিতেন।
এমন কি মুহাম্মদ মনছুর আলম নিজেই প্রতারণার আশ্রয়ে বিভিন্ন ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে ভুয়া ব্যাংক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বেশ কিছু চেকও গ্রহণ করেছেন। উক্ত চেকগুলি পরবর্তীতে ঋণ উত্তোলনে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতার জন্য একজন জামিনদারের তিনটি চেক জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা তিনটির অতিরিক্ত চেক গ্রহণ করে পরবর্তীতে ঋণ গ্রহীতা ও জামিনদারগণের অজ্ঞাতে
ঋণ আবেদনপত্রে জাল স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলন করেছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া যায়। দূদকের অনুসন্ধানকালে মুহাম্মদ মনছুর আলম নিজেকে ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করে ভুয়া জামিনদার/গ্যারান্টার এবং ঋণ গ্রহীতা তৈরিতে বা তৈরি করার অপরাধের সাথে ব্যাংক ব্যবস্থাপক এইচ.এম. বদরুদ্দৌজাকে সহযোগিতা করেছেন মর্মে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন রাঙামাটিস্থ সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহিদ কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দন্ডবিধি ৪০৬/৪০৯/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় এই মামলা রুজু করা হয়েছে।