• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি’র অস্তিত্ব সন্দেহজনক:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত নভেম্বর ৮, ২০২১
রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি’র অস্তিত্ব সন্দেহজনক:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিবিএন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কারণে বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের সাজা হওয়ায় রাজনৈতিক দল হিসেবে ভবিষ্যতে দলটির অস্তিত্ব টিকে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, ‘অস্ত্র চোরাচালান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এতিমদের অর্থ আত্মসাত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীর নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল টিকে থাকবে কীভাবে?

৭ই নভেম্বর কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে যুক্তরাজ্য (ইউকে) আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী এমন প্রশ্ন তোলেন।

লন্ডনে তাঁর বাসস্থান থেকে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির পাশাপাশি হত্যা মামলায়ও সাজাপ্রাপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘কেবলমাত্র আমাদেরই (সরকার) না, বেগম খালেদা জিয়ার ছেলেদের এই দুর্নীতির চিত্র আমেরিকার এফবিআই’র করা তদন্তে উঠে এসেছে।’তিনি আরো বলেন, ‘আমরা (সরকার) বিদেশ থেকে তাদের পাচারকৃত কিছু অর্থ দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের সূবর্ণ জয়ন্তীতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ সভাপতি আলহাজ্ব জালাল উদ্দীন,


অধ্যাপক আবুল হাশেম, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হক লালা মিয়া, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, মারুফ আহমেদ চৌধুরী,আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের নিগার চৌধুরী, যুবলীগ সভাপতিফখরুল ইসলাম মধু, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সভাপতি ব্যারিস্টার এনামুল হক।

জনসভায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের) কোন দেশপ্রেম ছিলনা, বরং তাদের চিন্তা ছিল ক্ষমতা ভোগ এবং লুঠপাট করা।

শেখ হাসিনা লন্ডনে তাদের (তারেক রহমান) বিলাসবহুল জীবন যাপন ও আয়ের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবন চালুর মাধ্যমে লুঠপাটের রাজত্ব কায়েম এবং লুঠেপুটে খাওয়া-দাওয়া শুরু করে। দেশের জনগণের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে। ঐ সময় বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে, জনগণ সামনের দিকে অগ্রসর হতে চায়, আমি কখনো জনগণকে পেছনের দিকে যেতে দেখিনি। কিন্তুু তারা সেটাই করেছে।’

সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশ অন্ধকার যুগে নিমজ্জিত হয়। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের জনগণ সরকারের সেবা পেতে শুরু করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করায় দেশের ভাগ্যের চাকা সামনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সর্বদা দেশের জনগণের পাশে থাকে এবং জনগণের কল্যাণের চিন্তা করে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর ভিক্ষাবত্তি করে চলে না, আজকের বাংলাদেশ তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। আমাদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ অর্থায়ন আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে আসে এবং আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি।’
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে শেখ হাসিনা বলেন, একটি কুচক্রীমহল এ সরকারকে বিশেষকরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ‘আমি বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও তারা তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্র্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসেনি। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে ক্ষমতায় এসেছি। এটিই আমাদের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। সারা দেশে এসব অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আপনারা (প্রবাসীরা) বিনিয়োগ করতে চাইলে, বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আমরা তা করবো।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তাঁর সরকার প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

শেখ হাসিনা দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রবাসীরা কোন ধরনের সমস্যায় পড়লে তাদের সে ব্যাপারে তাঁকে অবহিত করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান এবং আশ্বাস দেন যে, কোন সমস্যার সমাধান তিনি করবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা যাতে অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে সরকার সেটিরও পথ সুগম করবে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমার পিতা পাকিস্তানিদের কাছ থেকে এই দেশ স্বাধীন করেছেন এবং আমি জানি কীভাবে বাংলাদেশের উন্নতি করতে হয়।’

৭ নভেম্বরের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন এবং ১৯৭৫ সালের পর ১৯ বার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হয়।

তিনি বলেন, প্রতি বার অভ্যূন্থানকালে জিয়াউর রহমান সশস্ত্র বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হাজার হাজার কর্মকর্তা ও সৈন্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তিনি আরো বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে ৭ নভেম্বর হচ্ছে সৈনিক হত্যা দিবস।’