• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে ছোটমনি নিবাসে ২ মাসের শিশু খুন,ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত আগস্ট ১২, ২০২১
সিলেটে ছোটমনি নিবাসে ২ মাসের শিশু খুন,ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

বিবিএন ডেস্ক: সিলেটে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ছোটমনি নিবাসে মাত্র ২ মাস ১১ দিন বয়সী একটি এতিম শিশুকে আছাড় মেরে এবং বালিশচাপা দিয়ে হত্যার মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশুটির নাম নাবিল আহমদ।

গত ২২ জুলাই দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই রাতে শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়ার হাতেই নির্মমভাবে খুন হয়েছে অবুঝ শিশুটি। হত্যার পর ঘটনাটি গোপন রাখে ছোটমনি নিবাসের দায়িত্বে থাকা উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

ঘটনার ২০ দিন পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে আটক করেছে । তিনি মফিজুল ইসলাম সরকারের মেয়ে।

এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সাথে জড়িত সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।

জানা গেছে, ২২ জুলাই দিবাগত রাত ১১টার দিকে নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমনি নিবাসে মাত্র ২ মাস ১১ দিন বয়সী অবুঝ শিশু নাবিল আহমদ কান্নাকাটি শুরু করলে ক্ষিপ্ত হন সেখানকার দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা।

একপর্যায়ে তিনি শিশু নাবিলকে মাথার উপর তুলে সজোরে বিছানায় আছাড় দেন। বিছানার স্টিলের রেলিঙয়ে বাড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় শিশুটি। প্রচন্ড আঘাতের ফলে চিরদিনের জন্য থেমে যায় নাবিলের কান্না।

তারপরও থামেনি ভয়ংকর সুলতানার নির্যাতন। শিশু নাবিলের মুখের উপরে বালিশ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন পাষণ্ড আয়া সুলতানা। এরপর প্রমাণাদি লোপাটের চেষ্টা করেন তিনিসহ ছোটমনি নিবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে ২৪ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-৪৫) দায়ের করা হয়। ময়নাতদন্তের পর ইসলামিক রীতি অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন হয় শিশুটির।

অপমৃত্যু মামলার তদন্তভার পান কোতোয়ালি থানার এসআই মাহবুব। ঘটনার পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও মুখ খোলেননি ছোটমনি নিবাসের দায়িত্বে থাকা উর্ধ্বতন কর্মকতা, আয়া কিংবা অন্য কেউ।

বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালি থানা পরিদর্শনে আসেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উত্তর বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) আজবাহার আলী শেখ। এসময় তার দৃষ্টিগোচর হয় অপমৃত্যু মামলাটি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় রাত ১১টায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুবসহ পুলিশ ফোর্স নিয়ে বাগবাড়ির ছোটমনি নিবাসে ছুটে যান ডিসি আজবাহার আলী শেখ।

সেখানে লাগানো সিসি ক্যামেরায় শিশু নাবিল খুনের পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছিলো। ক্যামেরায় ধারণ হয় সুলতানা কিভাবে শিশুটিকে আছাড় মেরে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন, সেই দৃশ্য।

সিসি ফুটেজ দেখে আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে তাৎক্ষণিক আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

একটি সূত্র জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যে বা যারা রয়েছেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এবং যারা এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে জানা যায়।(একাত্তরের কথা)