(গতসংখার পর ৩য় পার্ট) এ কথা গুলো আমার একান্ত নিজের বিশ্লেষণ। কেউ মনঃক্ষুণ্ন হবেন না প্লিজ। স্হানীয় সরকারের আওতাধীন যত নির্বাচন আছে এর মধ্যে ইউপি নির্বাচন অন্যতম। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে স্হানীয় সরকারের একটি শক্তিশালী যোগসুত্র রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার স্হানীয় সরকার ব্যবস্হার মাধ্যমে জনগনের প্রকৃত সেবা জনগনের ঘরে পৌছাতে চায়। এ জন্য ইউপি নির্বাচন গুলি এতো গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের যে কোন ইউপির মেয়াদ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ের ভিতরে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। এ ধারাবাহিকতায় আমাদের ইউনিয়নের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা এখন নির্বাচন মুখী। তাই নির্বাচন নিয়ে সর্বত্র চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এবারের ইউপি নির্বাচনে সর্বমোট ৫ জন চেয়ারম্যান পদে এবং ভিবিন্ন ওয়ার্ডে মেম্বার পদে বেশ ক’ জন প্রতিদন্ধিতা করছেন।
মেম্বার পদপ্রার্থীদের নিয়ে জোর আলোচনা না থাকলে ও চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে চায়ের টেবিলে জমজমাট আলোচনা হচ্চে। নতুন মুখ, ক্লিন ইমেজের প্রার্থী, এম নাসির উদ্দীন কে নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র। কেউ কেউ বলছেন নাসির উদ্দীন কে ঠেকানো যাবে না। যদি না ভোট কেনা বেচার হাট না বসে। সততা দিয়ে তিনি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চান। শিক্ষা, সততাই তার শক্তি। ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে তার ভক্ত এবং ভোটার রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, এম নাসির উদ্দীন বয়সে তরুন। শিক্ষা দীক্ষায় রয়েছেন সবার চাইতে এগিয়ে। বাংলা /ইংলিশ দুই ভাষায় তিনি পারদর্শী। আচার /ব্যবহারে ও ভালো।চাল চলনে তার উপর কারো কোন অভিযোগ নাই। তাই তরুনদের মধ্যে তার ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। এক কথায় থাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন ইউনিয়নবাসী। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই এবার পরিবর্তন চাইছেন।
বিগত দশ বছর ধরে ইউনিয়নের নেতৃত্বে রয়েছে আওয়ামিলীগ। সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান পীর আব্দুল খালিক রাজা তিনি ও ছিলেন স্হানীয় আওয়ামী নেতা। কিন্তু তারপরে ও জনদাবী গুলো পুরণ করতে পারেন নি। অভিযোগ রয়েছে, স্হানীয় এম পি মুহিবুর রহমান মানিক সাহেবের বিরাগমান হওয়ায় সরকারি বরাদ্দ পান নি। ইউনিয়নে কাংখিত উন্নয়ন না হওয়ায় জনমনে রয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ। এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। উন্নয়ন অবকাঠামোর দিকে খেয়াল দেন নি। তাই জনগনের দুর্ভোগের সীমা নাই। কথা দিয়ে কেউ কথা রাখেনি।
ছাতক উপজেলায় আ’লীগ দুটি শক্তিশালী গ্রুপে বিভক্ত। কালাম গ্রুপ / মানিক গ্রুপ নামে পরিচিত। কালাম গ্রুপের নেতৃত্বে দিচ্ছেন ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী অন্যদিকে মানিক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমপি মহোদয় মুহিবুর রহমান মানিক।
সদ্য বিদায়ী ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন কালাম গ্রুপের তাই সরকারি দলের মানিক গ্রুপের কোন সাহায্য, সহযোগিতা, আনুকল্য তিনি পান নি। ফলশ্রুতিতে ইউনিয়নে কাংখিত উন্নয়ন হয় নি।
গ্রামের সাধারণ জনগন রাজনীতির এতো মারপ্যাচ তারা বুঝে না। তারা চায় উন্নয়ন, শান্তি, শৃংখলা।
দলীয় ভাবে শুধু আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিক নিয়ে মাঠে আছেন, আফজাল আবেদীন আবুল। তিনি অবশ্য গত টার্মের নির্বাচনে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী পীর আব্দুল খালিক রাজার কাছে হেরে যেন। এবারে ও তার সামনে রয়েছে বিরাট চ্যালেন্জ। নিজ দলের মধ্যে রয়েছেন দু জন বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় কোন্দল আর কাদা ছুড়াছুড়ি তো আছেই। নির্বাচনে দলীয় নেতা কর্মীরা রয়েছে বিভ্রান্তিতে। কালাম গ্রুপ আর মানিক গ্রুপ নামে দুটি বলয় তৈরী হওয়ায় নেতা কর্মীরা দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এ ক্ষেত্রে তিনি কতটা সুবিধা করতে পারবেন তা সময় বলে দিবে।
বিএনপি দলীয় ভাবে স্হানীয় নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচনী মাঠ অনেকটা ঠান্ডা। তবে তাদের স্হানীয় নেতা মোশাররফ হোসেন আনারস প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে আছেন। দলের নেতা কর্মীর কোন প্রচারণা তার পক্ষে এখন ও চোখে পড়ে নি। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির এক নেতার বাড়ি এই ইউনিয়নে। তিনি ও নিরব। তিনি কার পক্ষে আছেন? কেউ বলতে পারেনা। এ নিয়ে সন্দেহের দানা বেধেছে। বিএনপির হাজার হাজার ভোটার আছে সত্যি, তারপরে ও মোশাররফ হোসেন আছেন বে -কায়দায়…. চলবে।
আলী মুহাম্মদ সমুজ ( লেখক ও কলামিস্ট)