• ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আমি তোমাদের কামলা,তোমরা আমার চেয়ারম্যান:করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ২৬, ২০২১
আমি তোমাদের কামলা,তোমরা আমার চেয়ারম্যান:করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল
অনীশ তালুকদার বাপ্পু : “আমার কৃষক ভাইয়েরা প্রখর রোদে হাওরে ধান কাটবে, আমার দিন মজুর সারাদিন কষ্ট করবে, আমার মেধাবী শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না, আমার উপজেলার মা-বোনেরা বাদাম ও সবজী ক্ষেতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলাবে, আর আমি দামী চেয়ারে বসে আরামে চা পান করবো, এমন চেয়ারম্যান আমি হতে চাই না। পরিপাটি অফিসে বসে আরাম করার জন্য তাহিরপুর উপজেলাবাসী আমাকে ভোট দেন নি।” প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি তো চেয়ারম্যান। উত্তরে সাফ জানিয়ে দিলেন, “আমি কামলা, যারা যারা আমাকে বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন তারাই আমার

চেয়ারম্যান।”

দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বঞ্চিত তাহিরপুর উপজেলায় আজ উন্নয়নের বাতাস বইছে। তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের সাথে সুদীর্ঘ দিন রাজনীতি করে আসা জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেও মুজিব আদর্শের রাজনীতি থেকে একদিনের জন্য বিচ্যুত হন নি করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চষে বেড়াচ্ছেন তাহিরপুর উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। নেই কোন ক্লান্তি, নেই কোন রাজকীয় ভাব।

তাহিরপুর উপজেলা নিয়ে কি তার পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেন, বাংলাদেশের মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল, মুজিব তনয়া হাওররত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তানস্নেহে যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন, যে নৌকা প্রতীক আমাকে উপহার দিয়েছেন, নিজের জীবনের বিনিময়ে তার ঋণ আমি শোধ দিতে চাই কর্মের মাধ্যমে। তিনি বলেন, জীবনের ৪৫ টি বছর বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শকে বুকে ধারণ করে সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি। রাজনীতিতে সময়ের পরিক্রমায় অনেক পট পরিবর্তন হলেও আমি অবিচল থেকেছি। বিশ্বাস ছিল জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একদিন তাঁর ভালোবাসায় আমাকে স্থান দিবেন।

আমার বিশ্বাস আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি। মমতাময়ী নেত্রী আমার কাজের মূল্যায়ন করেছেন। ভালবেসে উপহার দিয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক নৌকা। আনন্দে বার বার শিশুর মতো কেঁদে উঠেছি আমি। তাহিরপুর উপজেলার মানুষ আমাকে বুকে টেনে নিয়েছে। মা-বোনেরা তাদের শাঁড়ির আঁচল দিয়ে আমার চোখের জল মুছে দিয়েছে। এই ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না।

তাহিরপুর উপজেলা সুনামগঞ্জ জেলার অন্যতম পর্যটন এলাকা। কিন্তু রাস্তা ভাল না থাকার কারণে পর্যটকগণ আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে বলেছি, আমাকে রাস্তা দিন, রাজস্ব নিন।”

তিনি বলেন, এই দাবী আমারও প্রাণের দাবী। শুধু তাই নয়, আমি আমার নেত্রীর কাছে বলেছি, তাহিরপুর উপজেলার পর্যটনের দিকে একটু সদয় দৃষ্টি দিতে। তবে আমি আশাবাদী অচিরেই রাস্তার উন্নয়ন কাজ শুরু করতে পারবো। পর্যটকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমি দুঃখিত।

তিনি আরো জানান, উপজেলার পাশে যে বড় পুকুর রয়েছে, সেই পুকুরটাকেও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আমার রয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষের দাবী আর আমার দাবী ভিন্ন নয়। যদি করুণা সিন্ধু বাবুল পর্যটন এলাকার রাস্তার উন্নয়ন করতে পারেন তবে এইকাজটাই হবে তার যুগান্তকারী কাজ।

তাহিরপুর উপজেলা সরেজমিনে ঘুরে বুঝতে পারলাম, উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি হাটে মাঠে ঘাটে চষে বেড়াচ্ছেন। গতবছর করোনা উপেক্ষা করে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিজে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েই আবার ফিরে গেছেন তার উপজেলার মানুষের কাছে। তিনি বলেন, তাহিরপুর উপজেলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন। আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। সৃষ্টিকর্তা আমাকে উজাড় করে সব
দিয়েছেন। এখন আমার একটাই উদ্দেশ্য আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা।

মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়নে আমি আমার সাধ্যমত কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটি উপজেলার উন্নয়ন বাজেট কত আসে তা আমার পূর্ববর্তী চেয়ারম্যনগণ ও এর সাথে জড়িত ব্যক্তিরা ভাল জানেন। এছাড়াও আমার পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান ও মেম্বার রয়েছেন। যারা নির্বাচনের সময় এলাকার জনগণকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন।

উন্নয়ন কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সুনামগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত হয়েছেন সকল উপজেলা চেয়ারম্যানদের সভাপতি হিসেবে। করুণা সিন্ধু বাবুল জানান, আমি সুনামগঞ্জ জেলার সকল সম্মানিত উপজেলা চেয়ারম্যানদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করে চলি। তাদের কোন কাজে আমার প্রয়োজন হলে সহযোগিতা করি। একটা কথা মনে রাখতে হবে, সুনামগঞ্জের সকল উপজেলার উন্নয়ন হলে, সমৃদ্ধ হবে সুনামগঞ্জ জেলা।

যুবসমাজকে একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দেয়ার জন্য, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা, ও পাঠাগার নির্মাণ করে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে আমার।

তিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেন, কোন মানুষই ভুল ত্রুটির উপরে নয়। আমারও অনেক ভুল ত্রুটি থাকবে। কাজ করলে সমালোচনা থাকবেই। যারা কাজ করে না তাদের কোন সমালোচনা নেই। কিন্তু সমালোচনার ভয়ে যারা কাজ করেন না তার ভীরু। আমি মুজিব সৈনিক। রাজপথে আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি, কিন্তু দমে যাই নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা ও স্নেহ যার সাথে আছে তার কোন ভয় নেই। মৃত্যু একদিন হবেই। অমরত্ব নিয়ে আমরা কেউ আসিনি। ভাল কাজের মাধ্যমে মৃত্যুর পর মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকতে চাই। সেই দোয়া ও আশীর্বাদ আমার জন্য করবেন।

এগিয়ে যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল। নতুন সূর্য হাতছানি দিয়ে ডাকছে আপনাকে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মনে রাখবেন, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।

করুনাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল,তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান।