• ৩রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৩রা রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকের কৈতক হাসপাতালের ডাক্তার মোজাহারুলের অপসারণের দাবীতে কর্মচারীদের কর্মবিরতি,প্রতিবাদ সভা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০২১
ছাতকের কৈতক হাসপাতালের ডাক্তার মোজাহারুলের অপসারণের দাবীতে কর্মচারীদের কর্মবিরতি,প্রতিবাদ সভা

 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: আরএমও’র নীতি বহির্ভূত কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে কর্মবিরতির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কৈতক ২০ শয্য হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণীর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মঙ্গলবার বিকালে হাসপাতালের গেইটের সামনে তারা এই কর্মবিরতি পালন করেন। আরএমও’র অপসারণের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করে তারা জানান, আরএমও ডা. মোজাহারুল ইসলামের নিয়মনীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডের জন্য কাজের প্রতি তাদের অনীহা বাড়ছে। তারা জানান, ডা. মোজাহারুল সময় মত হাসপাতালে না এসেচেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ফলে সেবাপ্রর্থীরা সঠিক সেবা না পেয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এবিষয়ে তার ইচ্ছার বাইরে কথা বললে নার্সদের সাথে অকাথ্য ভাষায় কথাবার্তা গালিগালাজ করে থাকেন। পাশাপাশি নার্সদের মাধ্যমে হাসপাতালের বাথরুম এবং ফ্লোর পরিস্কার করার কাজ করিয়ে থাকেন। তাছাড়া, মহিলা নার্সদের পিছনে মানুষ লেলিয়ে দেয়ারও অভিযোগ জানান তারা। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত ওয়ার্ডভয় আজাফর ও মাসুক প্রায় ২০বছর যাবৎ হাসপাতালে কাজ করছেন তাদের রেখে তিনি তার ব্যক্তিগতভাবে বাহিরের ওয়ার্ডবয় রাখছেন। অভিযোগ রয়েছে, তাদের মানসিক নির্যাতন করা হয় প্রতিনিয়ত। ফলে তারা মানুষকে সঠিক সেবা দিতে পারছেন না। বিদ্যুৎ বিলের নাম করে কর্মরত নার্সদের কাছ থেকে তিনি ৫০হাজার টাকা আদায় করেছেন। যারা টাকা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করবে তাদের চাকরি থাকবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন আরএমও মোজাহারুল ইসলাম।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স, কৃঞ্চা রানী দাস বলেন, ‘ দীর্ঘদিন আনি একই কর্মস্থলে থাকায় এলাকার প্রভাবশালী মহলের সাথে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা কথা বললে তাদের ভয় দেখানো হয় আমাদের। নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনগড়া মত হাসপাতালে আসেন । আমরা কিছু বললেই চলে আসে মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি। আমরা চাই আরএমও ডা. মোজাহারুল ইসলামকে এখান থেকে অপসারন করা হোক’।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. মোজাহারুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের নিয়মকানুন ফিরিয়ে আনার লক্ষে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করি। আর তাতে আমার বিরুদ্ধে একটা চক্র ষরযন্ত্র করছে। তিনি জানান, বিভিন্নজন আমার কাছে এসে অভিযোগ দেয়, নার্সরা সেবার নামে টাকা দাবী করেন। টাকা রদিলে হাসপাতালে ডেলিভারি করেন না দিলে সিলেটে রেফার্ড করে দেন। তখন আমি তাদেরকে এবিষয়ে সতর্ক করে দেই। তারপরও তারা আমার কথা না মানলে আমি সিদ্ধান্ত নেই জরুরী বিভাগ ও ডেলিভারি বিভাগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার। তখন থেকেই তারা আমার বিরুদ্ধে নানান ষরযন্ত্র করার চেষ্টা করে আসছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, কৈতক হাসপাতালের অবস্থার দিন দিন চরম অবনতি হচ্ছে। ডা. মোজাহারুল নার্সদের সাথে যে ব্যবহার করেন তা নিয়মনীতির মধ্যে পড়ে না। আরএমওর উপর যদি সকল সহকর্মী নারাজ থাকে তাহলে হাসপাতালে শান্তি থাকবে না। আর এর ভ্ক্তুভোগী হতে হবে সাধারন জনগনকে। আমরা চাই হাসপাতালের শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করুক।
এবিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্তী জানান, হাসপাতালের সকল স্টাফ কর্মবিরতি করেছে জেনেছি। কিন্তু তারা যে দাবীতে এমনটা করেছে এবিষয়ে তদন্ত ছাড়া কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।

এবিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, আমাদের কর্তৃপক্ষ সেখানে যাওয়ার পর সবকিছু শান্ত রয়েছে। আশা করি এরকম কিছু আর হবে না।’