• ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ:সাহসিকতার পরিচয় দিলেন সাংবাদিক সলমান চৌধুরী

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত মার্চ ৭, ২০২১
সিলেটে অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ:সাহসিকতার পরিচয় দিলেন সাংবাদিক সলমান চৌধুরী

সিলেট প্রতিনিধি:সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের নিউজফিডে ঘুরছে একটি ভিডিও। যাতে দেখা যাচ্ছে যুবক-যুবতীরা একসাথে বসে প্রকাশ্যে একের পর এক ধুমপানে করেই যাচ্ছেন। এমন এক অপসংস্কৃতির প্রতিবাদ করেও কোন ফলাফল না পেয়ে তাদের ভিডিওচিত্র প্রকাশ করায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছেন তিনি। ২২ ঘন্টায় তা দেড় লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পৌছে গেছে। এমন ভিডিও চিত্র প্রকাশ করায় যেমনটা প্রশংসায় ভাসছেন তিনি তেমনি আলোচনা-সমালোচনায় জন্ম দিয়েছেন।

জানা যায়, সিলেট শহরের আখালিয়াস্থ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখে একটি মিনি রেস্তোরায় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের সামনে প্রকাশ্যে ছেলেদের সাথে বসে ধুমপান করছিলেন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এ সময় আরেকজন ছাত্রী তাদের আড্ডায় যোগ দিতেই পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে একটি সিগারেট হাতে তুলে দেন তিনি। এক পর্যায়ে দুইজন ছাত্রীই সিগারেট খাচ্ছিলেন এবং পাশে দুই জন যুবকও বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন।

এ সময় পাশের টেবিলে বসা সাত বছরে একটি মেয়ে তাদের ধুমপান দেখে বার বার তাকাচ্ছিল।এক সময় শিশুটি তার মা’কে জিজ্ঞাসা করল, মেয়েরা কি সিগারেট খায়? মা অবাক হয়ে বললেন অবশ্যই না,মেয়েরা কেন সিগারেট খায়। এ সময় শিশুর মাও থমকে গিয়ে ছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা যে সিগারেট খাচ্ছেন আপনাদেরকে দেখে আমার মেয়ে জিজ্ঞাসা করছিল মেয়েরা সিগারেট খায় কি না? আমি তাকে কি জবাব দিব?

এ সময় সিগারেট টানতে টানতে এক ছাত্রী বললেন,
“আগের যুগটা এখন আর নাই,ছেলে-মেয়ে বলতে আলাদা কিঁছু আমরা তা বিশ্বাস করি না,এইটা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।” এ সময় তাদেরকে অবগত করা হলো এইটা কিন্তু সিলেটের সংস্কৃতি বিরোধী,এমন প্রশ্নের জবাবে একজন ছেলে বললেন, “আমরা সিলেটি না,তাই সিলেট নিয়ে আমাদের ভেবে লাভ নাই।”

এরপর গতকাল  রাত ১১টার দিকে ফেইসবুকে সলমান আহমদ চৌধুরী নামীয় একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে ভিডিও প্রকাশ করা হলে মূহুর্তেই তা ছড়িয়ে যায়।

এ ব্যাপারে সলমান চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান,আমি একজন সিলেটের নাগরিক। অন্যায়কে আমি কখনোই প্রশ্রয় দেই নি। যেখানেই অন্যায় দেখেছি সেখানেই প্রতিবাদ করেছি। উক্ত ঘটনার সময় আমি নিজে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ করেছি,তাদের ভূল তারা স্বীকার করে নেয়ার সুযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা তা না করে বরং আমার সিলেটের সংস্কৃতির উপরে আঘাত করে কথা বলেছে। আমি সত্যি খুব মর্মাহত। ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাহিরে হওয়ায় এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার সুযোগ ছিল না কারণ তারা এই ঘটনার জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার নেই। আমি এই নিকৃষ্ট কাজ কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।

এই ব্যাপারে যুবক-যুবতীদের নাম,পরিচয় এখনো জানা যায় নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের ব্যক্তিগত বেশ কয়েকটি ফেইসবুক গ্রুপে সলমান চৌধুরীর ছবি সহ নিয়ে নানা রকম কুরূচীপূর্ণ মন্তব্য করার প্রমাণাদিও পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে মামলা,বিক্ষোভ মিছিল,মানবন্ধন ও গ্রেফতারের কথাও উঠে এসেছে।

তবে দিনভর আলোচনার পর ফেইসবুকে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছেন সলমান চৌধুরী। সিলেটের আপামর জনতা সলমান চৌধুরীর এমন কর্মকান্ড ও সাহসীকতার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছেন সিলেটবাসী। সিলেটের সংস্কৃতির উপরে আঘাত হেনে এমন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে একাই অবস্থান নেয়ায় বেশ সাহসীকতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত এর আগেহ বেশ কয়েকটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেও বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে বাংলাদেশের স্বনামধন্য মিষ্টিজাত পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফুলকলিকে বাসী খাবার পরিবেশন করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ,শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এক কর্মকর্তার গাড়ি সড়কে পার্কিং করে যানযট সৃষ্টি,সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং ফি আদায় করা সহ মাদক,ছিনতাই,অসামাজিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি। এছাড়াও বেশ কিছু সমাজসেবা ও মানবতাবাদী কর্মকান্ড পরিচালনা করেও ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি।