সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটে বৃটেন ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনের জন্য খোঁজা হচ্ছে হোটেল
। এসব হোটেলে বৃটেন ফেরত যাত্রীরা ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। খরচ বহন করতে হবে প্রবাসীদেরই। গতকাল সন্ধ্যায় এ নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভার্চ্যুয়াল সভা করেছেন।
সভায় উপস্থিত থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- আগামী ১লা জানুয়ারি থেকে কোয়ারেন্টিনের নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। তবে- সিলেটে প্রস্তুতির সময় পাওয়া যাবে আরো ৩ দিন। বৃটেন থেকে সিলেটে বাংলাদেশ বিমানের আগামী ফ্লাইট আসছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। কিন্তু এ ফ্লাইটের যাত্রীরা পূর্বের নিয়মে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শনের পর চলে যেতে পারবেন।তবে- তাদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। এর পরের ফ্লাইট আসবে আগামী সোমবার। এ ফ্লাইটের যাত্রীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে। এভাবে আগামীতে বৃটেন থেকে ফ্লাইটে যেসব যাত্রীরা আসবেন সবাইকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। বাংলাদেশ বিমান সিলেটের আঞ্চলিক ম্যানেজার ফারুক আলম মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আপাতত আগের নিয়মে বৃটেনের সঙ্গে বিমানের ফ্লাইট চালু রয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার ও সোমবার পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিমানের দুটি ফ্লাইট সিলেটে আসবে। এখনো বৃটেনের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধের কোনো নির্দেশনা আসেনি। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- বৃটেন ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনের জন্য গতকালই মন্ত্রণালয় থেকে তাদের কাছে নির্দেশনা এসেছে। এরপর থেকে সিলেটের প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। সিলেটের খাদিমপাড়া এলাকায় বিআরটিআইয়ে সেনা তত্ত্বাবধানে ১০০ জনের রাখার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু প্রবাসীদের সেখানে রাখা নাও হতে পারে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় প্রবাসীদের কথা বিবেচনা করেই তাদের রাখা হবে আবাসিক হোটেলে। সন্ধ্যার ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানান- পরিসংখ্যানে দেখেছেন প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩০০ বৃটেন যাত্রী সিলেটে আসছেন। দুই সপ্তাহে আসবেন ৬০০ জন। ১৪ দিনের জন্য ৬০০ জন প্রবাসীর কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা রাখতে হবে। এরপর সপ্তাহে ৩০০ জনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলে আরো ৩০০ জন এসে যোগ দিবেন। মোট কথা সপ্তাহে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে ৬০০ জনের। এ কারণে ৬০০ জন যাত্রীর কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থার জন্য ভালো মানের আবাসিক হোটেল খোঁজা হচ্ছে। এসব হোটেলের ভেতরেই প্রবাসীদের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে প্রবাসীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারেন সে বিষয়টিও নজরে রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন- বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতো হোটেল খোঁজা হচ্ছে। এসব হোটেলে আবার থাকা-খাওয়ার ভাড়া কমানোর জন্য আলোচনা করা হবে। প্রবাসীরা যাতে স্বল্পমূল্যে ভালো সুবিধা পান সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। তিনি জানান- প্রবাসীরা ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা মাত্রই তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা পূর্বের মতো করা হবে। এরপর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের বাসে করে হোটেলে নিয়ে আসা হবে। যে হোটেলে নিয়ে আসা হবে সেই হোটেলে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এখানে যাত্রীরা অন্য কারো সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ পাবেন না। দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনরাও হোটেলে এসে সাক্ষাৎ করতে পারবেন না। কারণ- সিলেটে করোনার নতুন ভাইরাস ঠেকাতে এই উদ্যোগ সবার স্বার্থে নিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- আগামী ১লা জানুয়ারি থেকে লন্ডন থেকে যারা সিলেটে আসবেন তাদেরকে অবশ্যই সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। আগত প্রবাসীদের নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থাকতে হবে। সিলেটের কোনো আবাসিক হোটেল ভাড়া নিয়ে লন্ডন থেকে সিলেটে আগত প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন খোলা হবে। অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সনদ সঙ্গে আনার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা বহাল থাকছে। এদিকে- ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান এনডিসি, জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক সুলতানা রাজিয়া, সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।