• ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের মানববন্ধনে বক্তারা : অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন, নইলে কঠোর আন্দোলন

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২২, ২০২০
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের মানববন্ধনে বক্তারা : অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন, নইলে কঠোর আন্দোলন

সিলেট প্রতিনিধি: দৈনিক একাত্তরের কথা’র সম্পাদক চৌধুরী মুমতাজ আহমদ এবং প্রকাশক ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম বাবুলসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সিলেট সিটি কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ সেলিম কর্তৃক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে জেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রেসক্লাবের বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি ও নিউএজ পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মনিরের পরিচালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আল আজাদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি নিপীড়ন-নিষ্পেশনের আইন। আমরা শুরু থেকে এই আইনের বিরোধিতা করে আসছি। আশ্বস্থ করা হয়েছিল, এটি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হবে না। কিন্তু বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেই আইনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। সিলেটে প্রথম সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে সিলেট তথা বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক চৌধুরী মুমতাজ আহমদের বিরুদ্ধে। আমরা জানি চৌধুরী মুমতাজ যা লিখেন তা শতভাগ সত্যি। বিশ্বাস করি, দৈনিক একাত্তরের কথা’য় কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ সেলিমের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটিও সত্য। তারপরও যদি প্রকাশিত সংবাদে সাথে সেলিমের দ্বিমত থাকে, তাহলে তিনি পত্রিকায় প্রতিবাদলিপি পাঠাতে পারতেন, আমাদের জানাতে পারতেন, আমরা বিষয়টা দেখতাম। অথবা তিনি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের দ্বারস্ত হতে পারতেন। কিন্তু তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবলম্বন না করে সরাসরি মামলা দায়ের করেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, পুলিশ প্রশাসনও কোনো প্রকার তদন্ত না করে মামলা গ্রহণ করে ফেললেন। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, জানি, এরকম অনেক মামলা আছে, যেগুলোর সঠিক তথ্য প্রমাণ থাকা স্বত্বেও পুলিশ মামলা নেয় না। দিনের পর দিন সাধারণ মানুষকে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। তাদের নানা রকম হয়রানি করা হয়। কার মদদে আপনারা মামলা গ্রহণ করেছেন? আপনাদের উপরে কি কোনো চাঁপ ছিলো? তাহলে আপনাদের উপর আমরা বিশ্বাস ও ভরসা রাখব কিভাবে। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, কোনো বিষয় খতিয়ে না দেখেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেন কোনো মামলা গ্রহণ না করা হয়।

মানববন্ধনের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরোপ্রধান শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল। এসময় বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সিনিয়র সহসভাপতি মঈন উদ্দিন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশনের সভাপতি ফয়ছল আহমদ বাবলু, লোক গবেষক ও প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক শংকর দাস, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, উদীচী সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার ইয়াহইয়া মারুফ।

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত সহসাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রাসেল, নবনির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক দেশ’র জেলা প্রতিনিধি মিসবাহ উদ্দীন আহমদ, বর্তমান ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক ওলিউর রহমান, নবনির্বাচিত তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আলোকিত সময়ের সিলেট ব্যুরো প্রধান সুলতান সুমন, নবনির্বাচিত পাঠাগার সম্পাদক আমার সংবাদের সিলেট ব্যুরো প্রধান মঞ্জুর হোসেন খান, বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য সুব্রত দাস, নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্য সমকাল পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ইউসুফ আলী ও দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মিঠু দাস জয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের কথা’র মফস্বল সম্পাদক আনন্দ সরকার, সিলেট বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতা শফিকুর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলো’র ফটোসাংবাদিক আনিস মাহমুদ, দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সজল ঘোষ, যুগভেরীর ফটো সাংবাদিক রনজিৎ কুমার সিংহ, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ব্যুরো প্রধান আশরাফ চৌধুরী রাজু, একাত্তরের কথা’র স্টাফ রিপোর্টার এনামুল কবীর, দৈনিক শ্যামল সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার রাশেদুল হোসেন সোয়েব, একাত্তরের কথা’র স্টাফ রিপোর্টার দিব্য জ্যোতি সী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিলেট প্রতিনিধি মোখলেছুর রহমান মকলিছ, দৈনিক শ্যামল সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার সোহাগ আহমদ ও আতিকুর রহমান নগরী, দৈনিক ভোরের দর্পণের সিলেট ব্যুরো চিফ বাপ্পা মৈত্র, দৈনিক খোলাকাগজের ফটো সাংবাদিক নিজামুল হক লিটন প্রমুখ।

প্রেসক্লাব সদস্য ছাড়া আরোও উপস্থিত ছিলেন ডিবিসি নিউজের সিলেট ব্যুরো প্রধান প্রত্যুষ তালুকদার, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন আহমদ শফী, সংস্কৃতিকর্মী ও দৈনিক সুদিনের সম্পাদক বাদশা গাজী, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম মিশু, একাত্তরের কথা’র শিক্ষানবীশ রিপোর্টার সরওয়ার হোসেন মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা জুমা প্রেস’র আলোকচিত্রী মো. রাফায়েত হক খান, ফ্রিল্যান্স ফটোসাংবাদিক মো. সাইফুল আমিন, সিলটিভির ক্যামেরাপার্সন কাউছার আহমদ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ নভেম্বর দৈনিক একাত্তরের কথা পত্রিকায় ‘ভয়ে চুপ উপশহর’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ সেলিম বাদী হয়ে মামলা করেন। এজহারে অভিযোগ করা হয়, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। একাত্তরের কথা সম্পাদক চৌধুরী মুমতাজ আহমদ, প্রকাশক মো. নজরুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক সাঈদ চৌধুরী টিপু, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মোহিদ হোসেন, প্রধান ফটোসাংবাদিক এস এম সুজন, নিজস্ব প্রতিবেদক জিকরুল ইসলামসহ ১৮ জনকে।