• ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১১ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সুনামগঞ্জে বিজিবির জব্দ করা ৯০টি ভারতীয় গরু ‘গায়েব’: মামলা দায়েরের নির্দেশ আদালতের।

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

রক্ষক হয়ে ভক্ষক—এমনই অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জে বিজিবির জব্দ করা ৯০টি ভারতীয় গরু নিয়ে। হেফাজতের জন্য স্থানীয় পাঁচজন জিম্মাদারের কাছে হস্তান্তর করা হলেও পরবর্তীতে ওই গরুগুলোর আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এতে আদালতের নির্দেশে জিম্মাদারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

 

গত ৩০ এপ্রিল সুনামগঞ্জের সুরমা নদীতে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান হৃদয়ের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স অভিযান চালায়। ২৮ বিজিবির সদস্যদের অংশগ্রহণে ওই অভিযানে অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা ৯০টি গরু ও একটি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করা হয়। এরপর প্রথমে বিজিবির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, জব্দকৃত গরুগুলো প্রকাশ্যে নিলামে তোলা হবে। তবে নিলামের আগমুহূর্তে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তা বাতিল করা হয়। পরে আদালতের কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা ছাড়াই জব্দকৃত গরুগুলো দোয়ারাবাজার উপজেলার স্থানীয় পাঁচজন ব্যক্তির কাছে সাময়িক হেফাজত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হস্তান্তর করা হয়। জিম্মাদাররা হলেন দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার গ্রামের মৃত রসমত আলীর ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ হোসেন আলীর ছেলে সবির আহম্মেদ, বালিছড়া গ্রামের মৃত মরতোজ আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ, ধর্মপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাজমুল হাসান, দোয়ারাবাজার সদরের সাধক আল ছেলে বাহার উদ্দিন। হেফাজতনামায় উল্লেখ করা হয়, জব্দকৃত গরু ও নৌকার যে কোনো ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার জিম্মাদারদের বহন করতে হবে।

 

এর কিছুদিন পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্তে গেলে জিম্মাদাররা তাদের জিম্মায় থাকা জব্দকৃত ভারতীয় ৯০টি গরু দেখাতে ব্যর্থ হন যা পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে অবহিত করেন। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জিম্মায় থাকা ভারতীয় ওই ৯০টি গরু নিলামে তোলা হয়। কিন্তু নিলামের সময় দেখা যায়, বড় সাইজের আসল ভারতীয় গরুর বদলে জিম্মাদাররা ছোট সাইজের দেশীয় গরু প্রদর্শন করেন। এঘটনায় আসল ভারতীয় গরুগুলো আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে জিম্মাদারদের বিরুদ্ধে এবং প্রশাসনের নির্দেশে নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এতে হেফাজতের শর্ত ভঙ্গ হওয়ায় বিষয়টি আদালতের নজরে আসে।

 

রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জসিম উদ্দিন শুনানি শেষে এ ঘটনায় পাঁচ জিম্মাদারসহ সংশ্লিষ্ট দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। বিচারক নির্দেশ দেন—উল্লেখিত পাঁচ জিম্মাদার ও আরও কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে মামলা রুজু করে আদালতকে অবহিত করতে হবে।