মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, সমীপে সালাম,
পর সমাচার, এভাবে কাউকে কখনো চিঠি লিখা হয়নি, শুরুতেই ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। শ্রদ্ধা সম্মান ভালোবাসা জানবেন, আপনি কেমন আছেন তা জানতে চাইবো না। আপনার দেশের খেটে-খাওয়া মানুষ কিন্তুু ভালো নেই।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, এটা আপনার কেমন বাংলাদেশ? প্রতিদিন মন খারাপের কত লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে চলেছে! মহান স্বাধীনতা অর্জন বলেন, আর ৫ই আগস্টের মহান বিপ্লবের বীরত্ব গাঁথা সাফল্য বলেন, সব কিছুকেই গ্রাস করছে খুন, ধর্ষণ, চুরি ছিনতাই ডাকাতির মতো অজস্র ঘটনা। অন্যদিকে ক্ষমতার লোভে রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিবেক পঁচে যাচ্ছে। আমরা যেন কোন ভাবেই ইন্ডিয়ার গোলামীর জিঞ্জির থেকে মুক্ত হতে পারছিনা। সারা দেশের মানুষ ইন্ডিয়া বিরোধী হলেও রাজনৈতিক দলের অনেক শ্রদ্ধেয় নেতারা মনে করেন ক্ষমতার চাবিকাঠি ইন্ডিয়ার দাদা বাবুদের কাছে। তাদের যারা খুশি করতে পারবে তারাই হবে বাংলার অধিপতি।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি কিছুটা দৃঢ়তা নিয়ে লড়াই করছেন ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু কতদিন? আওয়ামী লীগের তো ইন্ডিয়া ছাড়া আর কিছুই নেই। অন্য দিকে দেশের মানুষের আবেগ অনুভূতিকে উপেক্ষা করে ইন্ডিয়ার প্রেমে ধ্যানে অনেক রাজনৈতিক দলের নেতারাও ব্যস্ত। বিএনপি জামাতের কাঁদা ছোড়াছুড়ি পরস্পর বিরোধী অপপ্রচার দেশের অপূরনীয় ক্ষতি হচ্ছে।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আমার বুঝে আসেনা ৫ই আগস্ট ১৮কোটি মানুষের এতো শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য এবং অভুতঃপূর্ব জনসমর্থন পেয়েও আপনার অন্তবর্তী সরকার এতো দূর্বল কেন? দেশবাসীর শান্তি শৃঙ্খলা নিরাপত্তার জন্য সরকার কেন সাহসী প্রদক্ষেপ গ্রহন করতে পারছে না! আপনাদের ভয় কিসে? জগণ্য খুনি, কুক্ষাত ধর্ষক, নিকৃষ্ট চাঁদাবাজ, দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক অর্থপাচারকারী দূর্নীতিবাজ এদের সংখ্যা যাই থাকুক। হয়তো কয়েক হাজার হবে এদের ক্রসফায়ার দেন, ১৮কোটি মানুষ খুশি হয়ে অসীম সাহসে সরকারকে সহযোগিতা করবে। এটা কেমন নতুন বাংলাদেশ? ৮বছরের শিশু আপন বোনের ঘরে ধর্ষনের শিকার হতে হয়, চলন্ত বাসে ধর্ষন, মসজিদের ইমাম ছাত্রীকে ধর্ষন করে। লজ্জায় নিজেকে ঘৃনা করি, ধর্ষনকারী ইমাম মাওলানা শফিকুর রহমান বসবাস করে ছাতকে।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস, হ্যাঁ আপনাকে বলছি। বহিঃবিশ্বে অসম্ভব সমাদৃত হলেও, আপনার কাজ দিয়ে সমগ্র জাতিকে হতাশ করছেন। যাদের গ্রেপ্তার করেছেন জেলে বসে নিরাপদে কিভাবে তারা রাষ্ট্রটাকে অস্থিতিশীল করছে? জেলে বসে সালমান এফ রহমান, ফারুক খাঁন কেমন করে দেশের ব্যাংক বীমা, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে?
দেশের মানুষ বলছে সরকার খাচ্ছে দাচ্ছে নাকে তৈল দিয়ে ঘুমাচ্ছে! মানুষের ধারণা কি অমূলক?
কেন আজ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা রাত জেগে মিছিল করে?
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, যদি আপনার শুরুর দিন থেকে আরো একটু সাহসী হতেন, যদি কয়েক হাজার রাঘববোয়াল দূর্নীতিবাজ নেতা আমলাদের জেলে ঢুকাতে পারতেন। যদি সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেশপ্রেমিক কাউকে দায়িত্ব দিতেন, তাহলে প্রশংসায় ভাসতেন ১৮কোটি মানুষের। বিশ্ব শুধু আপনার নতুন সাফল্যগুলো চেয়ে দেখতো। কিন্তু তা পারেননি, কেন পারেননি? শক্ত করে দেশের হাল ধরেন, নয়তো ব্যর্থতা অপারগতা স্বীকার করে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। কারণ বাংলাদেশ ভালো চলছে না, প্রতিদিন ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত হচ্ছে মানচিত্র। দেশের কোটি কোটি মা বাবা তাদের সন্তানদের নিরাপদ বেঁচে থাকা নিয়ে গভীর ভাবে শঙ্কিত। আমিও তো একজন বাবা, কেমন করে সহ্য করি ছোট্ট শিশু আছিয়ার কষ্ট অপমান আর বেঁচে থাকার জীবন যন্ত্রণা।
উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন কানপেতে শুনুন ১৮কোটি মানুষ আপনাদের গালি দিচ্ছে, ঘৃনা করছে।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আপনার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাহফুজ আলম, জেনারেল অবঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিগ্রেডিয়ার অবঃ শাখাওয়াত হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এদের কাজ আর কথায় দেশের মানুষ বড়ই কষ্ট পায়।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্লিজ একটু সাহসী হউন, দেশের মানুষের আস্থা ভালোবাসা বিশ্বাস ঐক্যকে শক্তিশালী করুন, স্বার্বভৌমত্বকে বাঁচান। নয়তো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে চরম নিষ্ঠুরতার নতুন ইতিহাস বাংলাদেশে রচিত হবে।
লেখকঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান