• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে পশুর হাট নিয়ে উত্তেজনা.যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ২৮, ২০২৪
ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে পশুর হাট নিয়ে উত্তেজনা.যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার গরু ও ছাগলের হাট এবং আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে গরু ও ছাগলের হাট নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় দু পক্ষের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ।

, গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টের পাশে নতুন বাজার পশুর হাটটি চলতি বছরের ২০২৪ সালের জন্য( ১৪৩১ বাংলা সনের) পহেলা বৈশাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা ভ্যাট,টেক্স ১৫ লাখ,খরচ ৫ লাখ সহ মোট ৮০ লাখ টাকায় আগামী ২০২৫ সালের (১৪৩২ বাংলা সনের) চৈত্র মাসের জন্য ইজারা পান স্থানীয় রফিকুল ইসলাম কিরন নামের একজন ব্যবসায়ী।

বৈধ ইজাদার কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়য়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের স্ত্রী নুরুন নাহার চিনু, মৃত. রফিকুল ইসলামের ছেলে কাওছার আহমদ সহ কয়েকজন আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজারে ভূমি অবৈধ ভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে হতে বন্দোবস্ত নিয়ে উক্ত সমবায় সমিতির নামে সাইন বোর্ডের  আড়ালে  পশুর খামার স্থাপন করেছেন। বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত সুনামগঞ্জ স্বত্ব মোকদ্দমা নং ১৪৪/১৮ ইং দায়ের করে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে উক্ত বাজারের ভূমি বাজারের ইজারা বহির্ভূত রাখা হয়েছে। এতে সরকারী ইজারাদারকে খাজনা আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। উক্ত সমবায় সমিতির জায়গা গোবিন্দগঞ্জের প্রতিষ্টিত গরু ছাগলের হাট। বর্তমান ইজারাদার রফিকুল ইসলাম কিরন এর অভিযোগ বন্দোবস্ত গ্রহিতারা উক্ত জায়গায় গরু ছাগলের হাট বসিয়ে এবং পশু  বিক্রয় করে অবৈধ ভাবে লাভবান হচ্ছেন ও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। ইজারাদার রফিকুল ইসলাম কিরন ইজারা গ্রহনের পর সরকারের নির্ধারিত স্থানে গরু ছাগলের হাট বসিয়ে বাজার পরিচালনা করা অবস্থায় আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর  পক্ষে অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল ও অন্যান্যরা  গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার গরু ছাগলের হাটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছেন এমনকি গরু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার ভয়ভীতিসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

গত ১৫ এপ্রিল  কতিপয় সন্ত্রাসী কতৃক হামলার ঘটনা ঘটে এমন অভিযোগ ইজারাদার রফিকুল ইসলাস কিরনের। আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর নামে অবৈধ ভাবে গরু ছাগল বিক্রয় বন্ধের দাবি জানিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে চলতি বছরের  গত ১৭ই এপ্রিল পশুর হাটের বৈধ ইজারাদার মোঃ রফিকুল ইসলাম কিরণ একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।

এ ব্যাপারে ইজারাদার রফিকুল ইসলাম কিরন ,জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন ,১৪৩১ বাংলা সনে অর্থাৎ ২০২৪ সালের পহেলা বৈশাখ থেকে ২০২৫ সালের আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত একবছরের জন্য এই বাজারটি ইজারা  নেওয়ার পরও একটি পক্ষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অবিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন গতবছর অর্থাৎ ১৪৩০ বাংলা সনে এই বাজারটি ১৯ লাখ টাকায় (খাজনা) ইজারা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরে ৬০ লাখ টাকা ভ্যাট,টেক্স ১৫ লাখ,খরচ ৫ লাখ সহ মোট ৮০ লাখ টাকায় ইজারা আনা হয়েছে। এই পশুর হাট উজারা প্রদান করায় সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায়ের ফলে এই জায়গাটি সরকার আামদেরকে দিয়ে এখানে পশুর হাট করার জন্য। কিন্তু ছাতক উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অলিউর রহমান বকুল দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্নভাবে এই বাজার ভোগদখল করে  আসছেন। তিনি আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি খামার গড়ে তোলা হয়েছে এটার নিবন্ধন ও নাই এবং ২০২১ সালের পর এটা নবায়ন ও করেননি তিনি। এটাকে সমবায় বাজার হাটাবাজার বলে এখানে গরু বিক্রি করে ও মুনাফা নিচ্ছেন বকুল। কিন্তু সরকারকে বিপুল টাকা রাজস্ব দিয়ে আমরা যখন এই পশুর হাটটি করা হলো আামদের পশুর হাটে গরু ছাগল আসছে না প্রতিপক্ষ গরু ব্যবসায়ী সহ আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে গরু ব্যবসায়ীদের গরু আসতে পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।

এ ব্যাপারে  আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমরা এই প্রতিষ্ঠানটি বৈধভাবে পরিচালিত করে আসছি। কিন্তু একটি পক্ষ আমাদের আফজালাবাদ গবাদি পশু ও কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সুনাম বিনষ্ট করতে নানান অপপ্রচার ও প্রোপাগন্ডা  চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান গোবিন্দগঞ্জ পূর্ব রামপুর মৌজার শতাধিক বছরের সরকারী সড়ক সংলগ্ন নয়নজুলি খাল জবর দখল করে মাটি ভরাট সহ এর শ্রেণী পরিবর্তন করছে একটি ভূমি খেকো চক্র। এ খাল দখলের পায়তারা করে আসছে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই। এ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও রয়েছে। আদালতের আদেশ. প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও পরিবেশ আইন ১৯৯৫ ও ২০০০ অমান্য করে ব্যবসা ও দখলের উদ্দেশ্যে খালে মাটি ভরাট ও দখলের চেষ্টা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে এলাকার মানুষ মানববন্ধন ও করেছে।

এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা  নির্বাহী অফিসার গোলাম মোস্তফা মুন্না বলেন বিষয়ট তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী ইজাদার কর্তৃক অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি অতি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় যেন কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না হয় সেদিকে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।