|| মুহাম্মদ ইলিয়াস-৩১ আগষ্ট, রাঙামাটি ||
দেশের বৃহত্তম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরুর সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। দীর্ঘ সোয়া চার মাসের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় রাতে আহরিত মাছ শুক্রবার সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় বড় আড়তে মাছের জোগান দেবে। প্রথম দিনে ৫০/৬০ টন মাছ আহরণের আশা করছে ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন সুত্র জানিয়েছে, রাঙামাটি জেলার ১০ উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দুই উপজেলা (খাগড়াছড়ি সদর ও মহালছড়ি ) মিলে ১২ টি উপজেলায় সর্বমোট ২৬ হাজার ৭শ’ ৫১ জন জেলে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন’র তালিকাভুক্ত রয়েছে। নিবন্ধিত ব্যবসায়ী রয়েছে ৭৫ জন। চলতি মাছ ধরা মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদ থেকে ১৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ খাত থেকে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন’র ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হতে পারে।
৭ শ’ ২৫ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল জলাধার কাপ্তাই হ্রদে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দিনগত মধ্যরাত থেকে জেলেরা মাছ শিকারের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা হতে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন’র পল্টনে সরকারি রাজস্ব পরিশোধ সাপেক্ষে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কার্পজাতীয় মাছ, কেচকি, চাপিলা, টেংরা, পুটি, মলা ডেলা, চিতল, বোয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সরবরাহ করবে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
সুত্র আরও জানিয়েছে, কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপনন কেন্দ্র, বামউক, রাঙামাটি কর্তৃক কাপ্তাই হ্রদে নিষেধাজ্ঞাকালীন পরিচালিত ১০ হাজার ৩৭ টি অভিযানে ৩ হাজার ৮ শ’ ৮ কেজি মাছ চোরা শিকারীদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়। জব্দ করা হয়েছে ৩ শ’ ২৬ টি ইন্জিন বোট। ১৪ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১.৮ লক্ষ মিটার জাল বাজেয়াপ্ত করা হয়।
উল্লেখ্য মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও অবমুক্ত করা মাছের পোনা স্বাভাবিক বৃদ্বির জন্য প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই মাছ শিকার বন্ধ থাকে। কিন্তু এবার কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় সময়সীমা ৩১আগস্ট পযন্ত বৃদ্ধি করা হয়। দীর্ঘ ৪ মাসের অধিক সময় ধরে মাছ শিকার বন্ধ থাকার পর রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন বিপনন কেন্দ্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। জেলেদের পাশাপাশি সকল মাছ ব্যবসায়ী ও কর্মজীবীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সকলে মাছের ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন ও ইঞ্জিন চালিত বোটের সকল সারঞ্জম ঠিকঠাক করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাপ্তাই হ্রদে ভারতীয় ও উজানের পাহাড়ি ঢলের সাথে বাঁশ, কাঠ আর কচুরিপানার জঞ্জাল জমে গেছে হ্রদের ভাটিতে। জেলেদের দাবী প্রশাসন যেন দ্রুত জঞ্জাল অপসারণে কার্যকর ভুমিকা রাখে।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপনন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো: আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, আমরা এবার ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বিলম্ব হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬ টা থেকে আমাদের পল্টনে মাছ আসা শুরু হবে বলে যোগ করেন এ কর্মকর্তা।