|| মুহাম্মদ ইলিয়াস,রাঙামাটি প্রতিনিধি ||
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, গতানুগতিক কৃষিকাজ করে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে না। কৃষি আধুনিক হলেই মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। সেজন্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে কাজ করছে। কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকার সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নানান উদ্যোগের ফলে কৃষি এখন যান্ত্রিকীকরণ হচ্ছে, কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাত করণ ও রপ্তানি বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার সাপছড়ি ও দ্বিচানপাড়ায় ভার্মি কম্পোস্ট, সূর্যমুখীর খেত, মাল্টা, আনারস,কাজুবাদাম ও কফি বাগান পরিদর্শন এবং চাষিদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
একইদিন একইদিন দুপুরে ও বিকেলে কৃষিমন্ত্রী রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিসে কৃষি আবহাওয়ার জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, কৃষি আবহাওয়া রেডিও উদ্বোধন করেন ও শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি ও উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ভিয়েতনাম কাজুবাদাম রপ্তানি করে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় করে। দেশটি যে পরিমাণ রপ্তানি করে, তার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করে। বাকী ৫০-৬০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করে থাকে। আমাদের দেশেও কাজুবাদাম উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করে ভিয়েতনামের মতো আয় করা সম্ভব। সেজন্য, পাহাড়ের বিশাল এলাকায় এসব ফসলের চাষ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। কাজেই ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড এবং কৃষি আবহাওয়া রেডিও-এর মাধ্যমে জরুরী কৃষি ও কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক বার্তা কৃষকদের নিকট সময়মত পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এটি অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সবসময়ই চোরাগলি পথে ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ হলো, নির্বাচন। আওয়ামী লীগ কোন দিন নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসেনি। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে হবে, সুষ্টু ও সুন্দর হবে। দেশের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে এবং শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, সিলেট ও মৌলভীবাজার যেমন চায়ের জন্য বিখ্যাত, ঠিক তেমনি কাজুবাদাম ও কফির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিচিত হয়ে উঠবে। কফি-কাজু বললেই মানুষ পাহাড়কে চিনবে। পাহাড়ে কাজুবাদাম ও কফি চাষের সম্ভাবনা অনেক। এসব ফসল একবার লাগালে অনেকদিন টিকবে, বছর বছর ফসল লাগাতে হবে না। এতে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হওয়া যাবে।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন এগিয়ে চলেছে। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে, পার্বত্যাঞ্চল দেশের জন্য বোঝা নয়, সম্পদশালী এলাকায় পরিণত হবে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সাংসদ দীপংকর তালুকদার, সাংসদ বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো: বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক৷ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, প্রকল্পের পরিচালক শাহ কামাল খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রমুখ ।