লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে পৃথক ৫ টি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ৫ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বেলা ১২ টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মোঃ জাাকির হোসেন আসামীদের উপস্থিতিতে এরায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের রিপন মিয়, ধর্মপাশা উপজেলার ফাতেমানগর গ্রামের রুকন মিয়া, জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর গ্রামের শাহিন মিয়া, সদর উপজেলার ইছাগরি গ্রামের শৈলেন দাস ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের আসাদ মিয়া।
সাজা প্রাপ্ত রিপন মিয়া ভিকটিমের সঙ্গে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে জোর পূর্ব ধর্ষণ করে পরে নির্যাতিতা সন্তান সম্ভবা হন পরে পুত্র সন্তান প্রশব করেন । ডিএনএ পরীক্ষায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এই মামলায় আদালত ৭ জনের স্বাক্ষী প্রমাণ ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা প্রদান করেন।
সাজা প্রাপ্ত রুকন মিয়া ধর্মপাশা উপজেলার একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণ করে। পুলিশের অভিযোগ পত্র ও ৯ জনের স্বাক্ষী প্রমাণে অপহরণ ধর্ষণের বিষয়টি সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত হয়। অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে আসামী রুকন মিয়াকে যাবজ্জীবন ও মামলার ২ নং আসামি আব্দুল লতিফকে ১৪ বছরের কারাদন্ড ও অর্থ দন্ড প্রদান করা হয়।
আসামী শাহিন মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে জোর পূর্বক অপহরণ ও ধর্ষণ করে। পুলিশের অভিযোগ পত্র ও স্বাক্ষী প্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হয় তাই তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডও অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শৈলেন দাস এলাকার নবম শ্রেণীর ছাত্রীর প্রাইভেট টিচার ছিলেন। তিনি পড়ানোর সুবাধে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। একপর্যায়ে ছাত্রীর ইচ্ছার রিবোদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। বিষয়টি স্বাক্ষী প্রমাণে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য আসামি শৈলেন দাসকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দশম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করে ইচ্ছার বিরোদ্ধে ধর্ষণ ও বিয়ে করে এঘটনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও তার বাবা ইদন মিয়া এবং মা জগত বানুকে আদালত খালাস প্রদান করেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবীগন জানান রায়ে বিবাদী পক্ষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করবেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি এডভোকেট নান্টু রায় বলেন নারী শিশু আদালতের বিচারক বিচার বিভাগের ইতিহাসে দৃষ্টান্তমূলক রায় প্রদান করেছেন। এক সঙ্গে ৫ টি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার বিচারকার্য সম্পাদন করে এক অন্যন্য নজির স্থাপন করেছেন। আদালতের এধরনের রায়ে সাধারণ মানুষ আস্থাশীল । জেলার নারী নির্যাতন রোধে এসব রায় মাইল ফলক হয়ে থাকবে।