• ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ছেলে অন্তরের বিয়ে দিয়ে ঘরে রাজকন্যা আনতে পারলেন না পীর হাবিব

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২
ছেলে অন্তরের বিয়ে দিয়ে ঘরে রাজকন্যা আনতে পারলেন না পীর হাবিব

সাজিদুল ইসলাম রানা: পীর হাবিব ভাইয়ের শেষ ইচ্ছে ছিলো ছেলে অন্তরকে বিয়ে দিয়ে একটি রাজকন্যা ঘরে আনা। যে রাজকন্যা তাঁর ঘরকে আলোকিত করবে। ছেলে অন্তর  লন্ডন ইউনিভার্সিটির অধীনে এলএলবি অনার্স করেছে।নিউক্যাসলের নর্থ আম্ব্রিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বারএটল পরীক্ষা শেষ করেছে।

কিন্তু সবার কি সব ইচ্ছে পূরণ হয়? না,সবার সব ইচ্ছে পূরণ হয়না।হাবিব ভাইয়ের ও হয়নি।এই ভেবে আজ অনেক কষ্ট পাচ্ছি।অনেক আশায় বুক বেঁধেছিলাম, তিনি ফিরে আসবেন। একজন শক্ত মনোবলের অধিকারী জীবন যোদ্ধা  হাবিব ভাই।সে হিসাবেই অনেক আশাকরে একটি সুসংবাদের অপেক্ষায় ছিলাম।

কিন্ত আজ সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক,সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তান, বিশিষ্ট সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান  আজ শনিবার বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পীর হাবিবুর রহমান স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাইয়ের জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। কিন্তু গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শে তিনি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন।

করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
বরেণ্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম, ১৯৬৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ শহরে।

তিনি গত ১৫ জানুয়ারি তাঁর ফেসবুক পেইজে শেষ ইচ্ছে নিয়ে একটি পোস্ট দেন।সেই পোস্টে তিনি একমাত্র ছেলে অন্তরের বিয়ে জন্য পাত্রী দেখা ও বিয়ে দিয়ে একটি রাজকন্যা ঘরে আনার ইচ্ছে প্রকাশ করে।  পাঠকদের জন্য হাবিব ভাইয়ের পোস্টটি নীচে দেয়া হল।

আমার অন্তরের এবার বিয়ে দিয়ে ঘরে রাজকন্যা নিয়ে আসবো।রাজুপুত্রের হাত ধরে রাজকন্যা মা আমার ঘর আলোকিত করবে।সবার আদরে বাস করবে।আজকাল চারদিকে বন্ধু বান্ধবীদের ছেলে মেয়েদের বিয়ের ধুম পড়েছে।দেখতে শুনতে ভালোই লাগছে।দুই বছর থেকে আমি কোন সামাজিক অনুষ্টানে যাইনা।এবার দুটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গেছি তাও মাস্ক খুলিনি আর ভীর এড়িয়ে চলার চেস্টা করেছি।একটি বান্ধবী কেয়ার ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় আরেকটি বড় ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব: হুমায়ুন বখত মুহিত ভাইর ছেলের বৌভাতে।নাসির ভাইর ছেলের বিয়েতেও যাবো।
আমার ছেলের নিজের পছন্দের কেউ নাই।সে একজন উদার ও পরিবারের প্রতি কেয়ারিং ছেলে।জন্মের পর থেকে পোষাকের রুচিতে তার আপস নাই।মায়ামহব্বতের হৃদয় তার।সৎ সহজ সরল আবেগপ্রবন।মনটা অনেক বড়।সমাজের গুনীজন থেকে সাধারনের সাথে তাকে মিশতে দিয়েছি।আত্নমর্যাদাও প্রখর।
সে লন্ডন ইউনিভার্সিটির অধীনে এলএলবি অনার্স করেছে।নিউক্যাসলের নর্থ আম্ব্রিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বারএটল পরীক্ষা শেষ করেছে।সব বিষয়ে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ন হয়েছে, একটি বিষয়ের ফলাফল সামনে দেবে।এতদিন অসুস্হ বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলো।এখন নিজেকে আইন পেশার সাথে জড়িত করার প্রক্রিয়ায়।পারিবারিক মূল্যবোধ সততার বিষয়ে সে সজাগ।তার পছন্দের কেউ নাই বলে পরিবারের উপর ছেড়ে দিয়েছে।আমিও স্বজনদের বলছি একটি সৎ শিক্ষিত পরিবারের রাজকন্যা এনে দাও।জীবনের অনেক কিছু গুটিয়ে ফেলেছি।এখন নাতি নাতনিদের সাথে খেলতে চাই।এর চেয়ে নির্মল সুন্দর আনন্দ আর কি আছে?