আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ও ডেল্টার আঘাতে সংক্রমণের ‘সুনামি’ সৃষ্টি করতে পারে, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ‘তীব্র চাপ’ তৈরি করবে।
বুধবার এক অনলাইন নিউজ কনফারেন্সে টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, আমি খুবই উদ্বিগ্ন, কারণ অতি সংক্রামক ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে এবং একই সময়ে ডেল্টাও ছড়াচ্ছে যা সংক্রমণের সুনামি বয়ে আনবে। খবর আল-জাজিরার।
এছাড়া মহামারি আসার পর এই প্রথম জাতিসংঘের স্থাস্থ্যবিষয়ক এই সংস্থাটির প্রধান সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে খুব তড়িঘড়ি নিশ্চিত করা হয়েছিল যে, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন মৃদু উপসর্গের।
গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। যা ইতোমধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ আমেরিকায় ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে। ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে গত মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭ জন শনাক্ত হয়। আর বুধবার দুই লাখ আট হাজার সংক্রমণ ধরা পড়ে। এছাড়া যুক্তরাজ্য, ইতালি, গ্রিস ও পর্তুগালেও সংক্রমণ ব্যাপকহারে বেড়েছে।
এদিকে ডব্লিউএইচওর ১৯৪ সদস্য দেশের মধ্যে ৯২টি দেশই ২০২১ সালের মধ্যে নিজ নিজ নাগরিকদের ৪০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস প্রত্যেককে আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি নিতে ‘নিউ ইয়ার রেজুলেশনের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে ডব্লিউএইচওর তথ্যমতে, আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ ১১ শতাংশ বেড়েছে। ডিসেম্বরের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪.৯৯ মিলিয়ন মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, এই বৃদ্ধি ক্লান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর তীব্র চাপ তৈরি করবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রাথমিকভাবে নতুন এই ধরনটিকে ‘বি.১.১.৫২৯’ নামে ডাকা হচ্ছিল। পরে ডব্লিউএইচও নতুন এ ধরনের নামকরণ করে ‘ওমিক্রন’ এবং একে ‘উদ্বেগজনক’ ধরন বলে আখ্যায়িত করে।