ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তির গাঁও ও পীরপুর দুটি স্থানে মানুষ চলাচলের রাস্তা সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বসতঘর, স্কুল, মসজিদ, ফসলি জমিসহ কয়েক লক্ষাধিক টাকার গাছপালা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আরো কয়েকশ পরিবার নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।
অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে এখানের ভৌগোলিক মানচিত্র অনেকটা পরিবর্তন হয়ে পড়েছে। নদীপাড় সংলগ্ন বসবাসকারী এসব পরিবার বসত ভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে অনেক আগেই অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছে। আবার অনেকেই নতুন বাড়ি করে নতুনভাবে জীবন-যাপন শুরু করেছে। সুরমা নদী ভাঙনের কবলে পড়ে কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তির গাঁও ও পীর পুর সুরামা নদীতে বিমান চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বহু পরিবার পরের বাড়িতে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় ইউনিয়নের আরো কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার বসত ভিটা হারানোর আশঙ্কায় দিনপাত করছে। সরেজমিনে কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তির গাঁও নদীপাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় করে জানাযায়। সুরমা নদী ভাঙনের বিভিন্ন চিত্র তারা তুলে ধরেন। গ্রামের মো: ফখর মিয়া ও চাঁন জানান, বর্ষা মৌসুমে খরস্রোতা সুরমা নদী ভয়াবহরূপ ধারণ করে। প্রতিদিনই নদীর পার ভেঙে পড়ার শব্দে এখানের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠে। বিগত ১০ বছরে এ অঞ্চলের শতাধিক পরিবার বসত ভিটা ও ফসলী জমি হারিয়েছে নদী ভাঙনের কারণে। এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। মুক্তির গাঁও গ্রামের সাবেক তোতা মেম্বার জানান, এ অঞ্চলের হিন্দু-মুসলিম যুগ-যুগ ধরে ধনে ধান্য সমৃদ্ধ ছিল। সুরমার ভাঙনের কবলে পড়ে বর্তমানে অনেকেই এ অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। শত শত একর ফসলি জমি ও শতাধিক বসতভিটা সুরমা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে মুক্তির গাঁও প্রাইমারি স্কুল ও কয়টা হাই স্কুল, মুক্তির গাঁও হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ সুরা নদী ভাঙ্গন মুখে রয়েছে। ভাঙন রোধ করা না গেলে সুরমা পাড়ের মানুষ আরো ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। পীরপুর ঝন্টু কুমার দাস জানান, এ অঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি, বসতবাড়ি, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, বাজার সুরমা নদী গ্রাস করেছে। বহু বিত্তবান ভিটে-মাটি হারিয়ে এখন পথের ভিখারী হয়ে দেশে-দেশে ঘুরছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এখনো এ অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।