আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছে যুক্তরাজ্য। রবিবার জি-৭ বৈঠকের সাইডলাইনে ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে উভয় পক্ষের উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এ নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়ান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে রায় দেয় যুক্তরাজ্যের মানুষ। এরপর থেকেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সরকারি বাণিজ্য বিষয়ক গৃহীত চুক্তিগুলো নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। উভয় পক্ষই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে স্থল সীমান্ত থাকা যুক্তরাজ্যের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ব্যাপারে একটি মীমাংসায় পৌঁছানোর চেষ্টা করে আসছে। তবে বরাবরই উত্তর আয়ারল্যান্ডের ইতিহাস, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম ও ভূগোলের সূক্ষ্ম সূত্র ধরে বিবাদ তৈরি হয়। তবে এবার সর্বশেষ বিবাদ তৈরি হয়েছে সসেজকে কেন্দ্র করে।
বিবাদের এক পর্যায়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন উত্তর-আয়ারল্যান্ডের ব্রেক্সিট ডিভোর্স চুক্তির কিছু অংশ একতরফাভাবে স্থগিতের হুমকি দেন।
ওই প্রটোকলে মূলত উত্তর আয়ারল্যান্ডকে ইইউ-এর শুল্ক ইউনিয়নে রাখা হয়েছিল। তারা একক বাজারের অনেক নিয়ম মেনে চলেছে। ব্রিটিশ এই প্রদেশটির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাকি অংশের মধ্যে আইরিশ সাগরে একটি রেগুলেটরি বর্ডারও তৈরি করা হয়েছিল। তবে বরিস জনসন একতরফাভাবে এই প্রটোকলের কিছু বিধান কার্যকর করতে বিলম্ব করেন। তার মতে, এই প্রটোকলের ফলে ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর আয়ারল্যান্ডে সসেজের মতো কিছু সামগ্রীর সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গেও বৈঠকেও বিষয়টির অবতারণা করেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, ফ্রান্সের তুলুস শহরের সসেজগুলো প্যারিসের বাজারে বিক্রি করতে না পারলে ম্যাক্রোঁ কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন?
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, বরিস জনসনের এমন প্রশ্নের উত্তরে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ নয়।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, কার্বিস উপসাগরীয় অঞ্চলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন পরিসংখ্যানে কিন্তু খোলামেলাভাবে এখন এবং কয়েক মাস ধরে উত্তর আয়ারল্যান্ডকে এক রকম একটি পৃথক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এটি ভুল।
ডমিনিক রাব বিবিসি-কে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বোঝাপড়ার ঘাটতি আছে। আমরা কাতালোনিয়া ও বার্সেলোনা কিংবা ফ্রান্সের কর্সিকা সম্পর্কে এভাবে কথা বলবো না।’
ফ্রান্সের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বরিস জনসন সসেজের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসার মাধ্যমে ম্যাক্রোঁকে আক্রমণাত্মক অবস্থানের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। আর ভৌগোলিক পার্থক্যের কারণে সসেজের তুলনা এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেছেন ম্যাক্রোঁ। সূত্র: রয়টার্স।