• ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৮শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

রেল লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে দাবি জানালো সুনামগঞ্জ চেম্বার

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুন ১৩, ২০২১
রেল লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে দাবি জানালো সুনামগঞ্জ চেম্বার

বিবিএন নিউজ ডেস্ক:সুনামগঞ্জ রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে চলমান দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও বিভাজন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রী। রোববার (১৩ জুন) প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল ও সহ-সভাপতি খন্দকার মনজুর আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

বিবৃতিতে চেম্বার নেতৃবৃন্দ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে ট্যাকনিক্যাল এক্সপার্ট প্রেরণের মাধ্যমে উপযুক্ত স্থানের সম্ভাব্যতা যাছাই শেষে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

চেম্বারের বিবৃতি
বহুমুখী সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও যোগাযোগ অবকাঠামোগত কারণে এখনো সুনামগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য আশানুরূপ সম্প্রসারণ হচ্ছে না। অতীতের মতো ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে-উদ্যম আছে। তবে, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আমরা আজও পিছিয়ে আছি । এখনো আমাদের একমাত্র প্রদান ও ব্যয়বহুল পরিবহন ব্যবস্থা সড়কপথ। তাই সহজে কম খরচে দেশের বিভিন্নস্থানে পণ্য আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে এই সড়কপথে আমাদের ভরসা।

এখন সিলেট সুনামগঞ্জ মোহনগঞ্জ রেল লাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প যখন আমাদের সামনে বাস্তবায়ন রূপে ধরা দিয়েছে তখন আমাদের বহুল কাঙ্খিত এই উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে অপরাজনীতি হোক, আমরা তা চাই না। চাইনা আমাদের স্বপ্নের এই দাবিটি মুখ থুবরে পড়ে থাকুক। আমরা তাই জনপ্রতিনিধিদের এ নিয়ে রাজনীতি না করে কিভাবে দাবিটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় সেই আহ্বান জানাতে চাই। আমরা চাই না আমাদের স্বজন রাজনীতিবিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কে পাশ কাটিয়ে এই প্রকল্পে বাহিরের কোন মন্ত্রী কে অযাচিতভাবে ডেকে এনে পানি ঘোলা করে রাজনীতি করুন আমাদের জনপ্রতিনিধিরা। আমাদের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেকনিকেল এক্সপার্টরা যেদিকে রেললাইন সম্প্রসারণ এর মতামত দিবেন আমরা সেদিকেই বৃহত্তর স্বার্থে রেললাইন সম্প্রসারণ কার্যক্রম মেনে নেব। আমরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। চাইনা আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প বিলম্ব হোক।

করোনা মহামারী কালে ব্যবসা-বাণিজ্যে নানা সংকটে আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি। তবে এরই মধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ -মোহনগঞ্জ রেল লাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প আলোর মুখ দেখায় আমরা আশাবাদী হয়ে উঠি। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন,অসমতা পিছিয়ে পড়া জনপদে আমরাও উন্নয়নের মূল ধারা তে চলে আসি। সারা দেশের উন্নয়নের দরজা খ্যাত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আমাদের স্বজন রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানকে গুরু দায়িত্ব দেন আমাদের নেত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের রোল মডেল জননেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে মাননীয় মন্ত্রী জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি, ব্যবসাসহ নানা ক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে জাতীয়ভাবে উন্নয়ন ভাবে সমতায় নিয়ে আসতে কাজ করছেন নির্বাচিত সংসদ সদস্য বৃন্দ সাধ্যমত উন্নয়নে কাজ করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে স্বপ্ন দেখা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, উত্তরের দোয়ার খ্যাত জাদুকাটায় শাহ আরেফিন সেতু, দক্ষিণের দোয়ার খ্যাত কুশিয়ারা সেতুসহ নানা ধরনের স্থাপনা আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আরো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা ভাবতে শুরু করি ।

এর মধ্যে আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প সুনামগঞ্জের রেললাইন সম্প্রসারণ এগুতে থাকে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রমও চলে। এই অবস্থায় উত্তর ছাতক ও দোয়াবাসী দাবি করে ছাতক শহর থেকে সুনামগঞ্জ শহর পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারনের। অন্যদিকে ঝাউয়াসহ দক্ষিণ ছাতকবাসী দাবি করেন গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ শহরে রেললাইন নিয়ে আসার জন্য। তাদের যুক্তি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই পথ উপযুক্ত। জনগণের বিভক্ত অংশের দাবীর প্রতি কন্ঠ মিলন জনপ্রতিনিধিরাও।

সম্প্রতি এই বিতর্কে জড়ান আমাদের সুনামগঞ্জ -৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেন গুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সুনামগঞ্জ-১আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার। তারা উত্তর ছাতক বাসির দাবীর প্রতি দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে ছাতক পৌর শহর থেকে সুনামগঞ্জ পৌর শহর রেললাইন সমপ্রসারণের জন্য রেলমন্ত্রী বরাবরে এ দাবি জানান। এই দাবিকে অযৌক্তিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের মন্ত্রী এম এ মান্নানকে পাশ কাটিয়ে সিলেট শহরে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়কে যুক্ত করে আরো বিতর্ক বাড়িয়ে তোলে। এতে সাধারন মানুষ জন আমাদের ব্যবসায়ী সমাজ মর্মাহত। তাই সাধারণ জনগণের সঙ্গে ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। যে কারণে রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প আবারও হবে বিলম্বিত। রাজনৈতিক হিংসার কারণে অধরা থাকবে আমাদের কাঙ্খিত দাবিটি। আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের স্পষ্ট বক্তব্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার টেকনিকেল এক্সপার্ট যেদিকে বৃহত্তর স্বার্থে রেললাইন সম্প্রসারণ করবেন আমরা সেদিকে মেনে নেব।এই নিয়ে রাজনীতি করে আমরা আর উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকতে চাই না । আমরা চাই সিলেট সুনামগঞ্জ মোহনগঞ্জ পর্যন্ত রেল লাইনের মাধ্যমে আন্তঃজেলা যোগাযোগ সম্প্রসারিত হোক ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগের প্রসার ঘটুক।