সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে বার্ষিক সদস্য অর্ন্তভুক্তি ও খসড়া ভোটার তালিকায় তাদের নাম সন্নিবেশিত করার অভিযোগ উঠেছে। গঠনতান্ত্রিকভাবে মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমান এডহক কমিটি তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব পালন করছে, যা গঠনতন্ত্র বিরোধী বলে অভিযোগ উঠেছে।
, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সুনামগঞ্জ ইউনিটের কার্যক্রম সচল ও গতিশীল রাখার লক্ষ্যে চলতি বছরের মার্চ মাসে এডহক কমিটি গঠিত হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এডহক কমিটি থাকলে নির্বাচন কর্তৃক তফসিল ঘোষনার ১ মাস পূর্বে সদস্য নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু, এডহক কমিটি ১ সপ্তাহ পূর্বে ৯৪ জনকে তড়িগড়ি করে সদস্য অনর্ন্তভুক্তি করেন। এমনকি তাদের খসড়া ভোটার তালিকায়ও ১৩ নভেম্বর অর্ন্তভুক্তি করে নাম প্রকাশ করা হয়েছে। ১৬ নভেম্বর আপত্তি-নিষ্পত্তির তারিখ ছিল। রেডক্রিস্টে সুনামগঞ্জ ইউনিটের কয়েকজন আজীবন সদস্য ১৬ নভেম্বর খসড়া ভোটার তালিকার উপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে লিখিত আপত্তি করেন। কিন্তু, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তা আমলে নেন নি। নির্বাচন কমিশন বলেন,-আমরা পরিপত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত সদস্যদের ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্তি করেছি। তাছাড়া এই ভোটার তালিকা আমাদের প্রণীত নয়। এডহক কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারির দেয়া তালিকা অনুযায়ী আমরা খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছি।
জেলা প্রশাসন গত ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। এর আগে সদস্য সংগ্রহ সংক্রান্ত নির্দেশনা স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা না দিয়েই সদস্য নেয়া হয়েছে। রেডক্রিসেন্টের একাধিক আজীবন সদস্য অভিযোগকরেন, নির্বাচনে একটি বিশেষ গোষ্টিকে বিজয়ী করতেই পেছনের তারিখে ফরম পুরন করে সদস্য করা হয়েছে। যা উক্ত সদস্যদের শেয়ার মানি প্রেরণ ও ফি জমার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখলেই প্রমাণিত হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিশন গঠনের পর নতুন সদস্য নেওয়ার সুযোগ নেই, তবুও কর্তৃপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে তড়িগড়ি করে বার্ষিক সদস্য অন্তর্ভূক্তি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশনও স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেনা।
আজীবন সদস্য ফারুক মিয়া বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের পর সদস্য নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। তারপরও অনেককে পুরনো তারিখে সদস্য করা হচ্ছে। ক্যাশ রেজিস্ট্রার ও ব্যাংক ড্রাফট যাচাই করলেই অনিয়ম ধরা পড়বে। আমরা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করার পুরনো কৌশলের নিন্দা জানাই।
আরেক সদস্য রাহুল দে পাপলু বলেন, বর্তমান এডহক কমিটি তৃতীয় মেয়াদে কাজ করছে, যা গঠনতন্ত্রে নেই। কমিশনকে দায়িত্ব না দিয়ে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। নির্বাচন না দিতে পারলে এত আগে কেন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কমিশনকে কেন দায়িত্ব দিতে বিলম্ব করা হলো?
এমন প্রশ্ন অভিযোগ কারীদের।
সুনামগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির অফিস সহকারী কণিকা তালুকদার জানান, এডহক কমিটির তৃতীয় মেয়াদ চলছে। ৫ নভেম্বর কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ৩০ অক্টোবর সদস্য বন্ধ থাকার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯৪ জন নতুন সদস্য নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যেভাবে বলছে তিনি সেভাবেই কাজ করছেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন আমি পরিপত্রের আলোকে কাজ করছি ।
আজীবন সদস্য রওনক আহমদ বখত অভিযোগ করেন, একটি চক্র রেডক্রিসেন্টের অফিস দখলের পায়তারা করছে। তাদের নির্দেশেই বর্তমান কমিটি কাজ করছে। এই এডহক কমিটিতে ঐ দখলদাররাই বেশী।
এছাড়াও আজীবন সদস্য মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া, মুর্শেদ আলম, ফারুক আহমদ লিলু, আমির হোসেন ও আকবর আলী বর্তমান এডহক কমিটির এহেন কার্যকলাপের নিন্দা জানান। তারা বলেন, রেড ক্রিসেন্ট এর মতো একটি সমাজ সেবা মূলক প্রতিষ্টানের পরিচালনা কমিটি দখল দারিত্ব মনোভাব আমাদেরকে বিষ্মিত করেছে।
সুনামগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পদাধিকার বলে সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক ড মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার ফোনে একাধিক বার কল করে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় জানা সম্ভব হয়নি।