সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ জেলার রবি ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের বিপরীতে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিকটন ধান আকস্মিক বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ বছর বোরো ফসল উত্তোলন ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় হাওর অঞ্চলের বোরো ধান যথাসময়ে কর্তন করা সম্ভব হয়েছে। এই বাম্পার ফলন শুধুমাত্র সুনামগঞ্জ জেলার কৃষকদের জন্য নয়,বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির জন্য ও সহায়ক বটে। এই আনন্দ ঘন মুহুর্ত কে উৎসব মুখর করে রাখতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৩ মে মঙ্গলবার বিকালে তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরের পাড়ে ফসল কর্তন সমাপনী ২০২৫ আয়োজন করা হয়।
এ আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ড. ইলিয়াস মিয়া বলেছেন, আকষ্মিক বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ জেলার বোরো ফসল উত্তোলনে ঝুঁকিপূর্ন থাকলেও সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং মহান সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় হাওর অঞ্চলের বোরো ধান যথা সময়ে শতভাগ কর্তন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, রবি মৌসুমে ২,২৩,৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের প্রায় ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। এই বাম্পার ফলন শুধু মাত্র সুনামগঞ্জ জেলার কৃষকদের জন্য নয় বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির জন্যও সহায়ক হবে। তিনি বলেন, এ ধানের সঙ্গে কৃষক পরিবারের পুরো এক বছরের খাবার, সন্তানের লেখাপড়া, বিয়ে শাদিসহ যাবতীয় ব্যয় জড়িত। তাই ধান গোলায় উঠলে কৃষক পরিবারে পুরো বছর আনন্দ থাকে। কোনো কারণে ধান না পেলে তাঁদের কষ্টের সীমা থাকে না। এবার কৃষকেরা ধান তুলত পেরে বেশ আনন্দিত হয়েছেন ।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে, উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার মো. ইমরান হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা কৃষি উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ ওমর ফারুক, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিসুল হক, মো. কামরুজ্জামান কামরুল, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ, তাহিরপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুনাব আলী, জেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট সেরেনুর আলী, সাংবাদিক দেওয়ান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, বাবরুল হাসান বাবলু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, এবার সুনামগঞ্জ জেলার ১২ উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও নন হাওরে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে। যা বর্তমান বাজার মূল্য ৫ হাজার কোটি টাকা।
জেলার ১৩৭টি ছোট-বড় হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর
জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। এবার সরকার ধান সংগ্রহ অভিযান ও আগেই শুরু করেছে। গত ২৪ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সারা দেশে বোরো সংগ্রহ অভিযান হয়। ৩৬ টাকা কেজি ধরে ১৪৪০ মন ধরে ধান কেনা চলমান রয়েছে। এতে কৃষক গণ ও খুশি।