• ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মনির হত্যাকান্ডের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ১৪, ২০২৫
শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মনির  হত্যাকান্ডের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মনির হোসেন হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে শহরের

 

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মৃত মোকসেদ আলীর স্ত্রী ও নিহত মনির হোসেনের মাতা

 

মোছা. বকুল বেগম জানান, আমার ছেলে মনির হোসেনের হত‍্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকলের ফাঁসি চাই।

 

 

তিনি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর ৩ ছেলেকে নিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে জীবন-জীবীকা নির্বাহ করে আসছি। আমার বড় ছেলে মনির হোসেনের স্ত্রী মোছা. জনিক আক্তার ও উকারগাও গ্রামের রাজন আহমদের পরকিয়ার সম্পর্কের জের ধরেই আমার ছেলে মনির হোসেনকে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

 

 

তিনি মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার এস. আই সুলেমানের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আসামীদের বাড়িতে গিয়ে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে সময় কাটান। তিনি এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস. আই সুলেমান ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, হত‍্যাকান্ডের সাথে তোমাকে জড়িয়ে দেবো। এমন হত‍্যাকান্ডের ঘটনা তুমিও করতে পারো। পরে জানমালের নিরাপত্তা পেতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে মোছা. বকুল বেগমের পক্ষে মো. কামরুজ্জান লিখিত বক্তব‍্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব‍্যে তিনি জানান, এ ঘটনায় শান্তিগঞ্জ থানায় নিহত মনির হোসেনের মা হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি উকারগাঁও গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজন আহমদ, রাসেল মিয়া, জাহির আলীর ছেলে সহিবুর রহমান, আব্দুন নুর এর ছেলে আলী আহমদ মৃত রহমত আলীর ছেলে মো. তাহের আলী, আব্দুল খালিকের মেয়ে মোছা. জনিক আক্তারকে আসামী করেন।

 

 

তিনি বলেন, আসামীদের মাঝে ৪ জন গ্রেফতার হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি আব্দুন নুরের ছেলে আলী আহমদ ও মৃত রহমত আলীর ছেলে মো. তাহির আলী।

 

 

তিনি বলেন, এছাড়াও আসামী গংদের মাঝে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত একই গ্রামের কামাল উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, আলী আকবর, জহিরুল ইসলাম, এদের গ্রেফতারের কথা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জ থানার এস আই সুলেমানকে জানালে তিনি রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান।

 

 

তিনি বলেন, ৩ বছর পূর্বে মোছা. বকুল বেগমের বড় ছলে মনির হোসেন (৩০), স্ত্রী, ১ মেয়ে ও ১ পুত্র তার বসতবাড়ীতে রাখিয়া দুবাই যায়। মনির হোসেন দুবাই চলে যাওয়ার পর তার স্ত্রী মোছা. জনিক আক্তার (৩০) একই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজন আহমদের সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে একাধিকবার বাঁধা নিষেধ দেয়া হয়। বাঁধা নিষেধ অমান্য করে অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকে সে। এক পর্যায়ে মনির হোসেনকে প্রভাবিত করে ৬ কেদার জমি বন্ধকীর কথা বলে ৩ লক্ষ টাকা আনিয়া রাজন আহমদের হাতে তুলে দেয়। গত দেড় মাস পূর্বে মনির হোসেন দেশে আসিয়া তার স্ত্রী’র কাছে জমি বন্ধকীর বিষয়ে জানতে চাইলে, তার স্ত্রী ও রাজন সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। তার ছেলে মনির হোসেন দেশে আসার কারণে তাহার স্ত্রী জনিক আক্তার ও রাজন আহমদের পরকিয়ার সম্পর্কের বাঁধা হওয়ায় বিবাদীগণ মনির হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

 

 

তিনি বলেন, গত ১১/১/ ২০২৫ ইং অনুমান সন্ধ্যা ৭ টায় বিবাদীগণ মনির হোসেনকে বসতঘর হতে বাহির হওয়ার জন্য ডাকাডাকি করে। এক পর্যায়ে বন্ধকি জমির বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানায়। এ কথা শুনে মনির হোসেন ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ১২/১/২০২৫ ইং সকাল পর্যন্ত মনির বাসায় না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে ওইদিন তাহির আলীর জমিতে মাথায় ধারালো অস্ত্রের ছেদ, রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়।

 

 

তিনি বলেন, গত দুই বছর পূর্বে উকারগাও গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে মো. তাহির আলীর সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল এবং মামলা মোকদ্দমাও বিদ্যমান আছে। পরকীয়াসহ এসব কারণে তার ছেলে মনির হোসেনকে হত‍্যা করা হয়েছে। তিনি মনির হোসেন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. কামরুজ্জামান, হুঁশিয়ার আলী, জেবেদ আলী, মিয়া হুসেন, গেদা মিয়া, মোস্তফা মিয়া, আব্দুল কদ্দুছ, জমাদার মিয়া, জমির মিয়া, ফয়জুর রহমান, সাবাজ মিয়া, আবু সালেহ, নুরুল মেম্বার, মনির মিয়া, মজবিল মিয়া, ইমন মিয়া, নিহতের মাতা বকুল বেগম, আব্দুন নুর, রজব আলী, ছুরত জামান বকুল প্রমূখ।