সুনামগঞ্জ প্রতিনধি:
সুনামগঞ্জ জেলার হাওরের বোরো ফসল সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে কর্তন ও কৃষকের গোলায় তোলা পর্যন্ত করনীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬ এপ্রিল রবিবার সকাল ১১ টায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক সমর কুমার পালের সঞ্চালনায় এবং জেলা প্রশাসক ড মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ২ মোঃ এমদাদুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোস্তফা আজাদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সুনামগঞ্জ শাখার সভাপতি আবু নাসের, জামায়াত নেতা মোমতাজুল হাসান আবেদ, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, ক্যাব সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, সাংবাদিক পংকজ দে, গিয়াস চৌধুরী, শহীদ নুর, এমরানুল হক চৌধুরী,এছাড়াও সকল ইউএনও গণ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক ড মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে তবে এপ্রিল মাসের মধ্যেই জেলার সব কটি হাওরের বোরো ফসল কর্তন করে কৃষকের গোলায় তোলা সম্ভব হবে। তারপরও যদি অকাল বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগের সম্মুখীন হই তার জন্য জেলা প্রশাসন সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যেই সুনামগঞ্জ জেলার ১২ জেলার ইউএনও দের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের ও সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য অনুরোধ করেন। জেলা প্রশাসক বলেন প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বোরো ধান কর্তন করার জন্য ৯৫০ টি কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টার মেশিন, ১৭২ টি রিপার মেশিন প্রস্তুত আছে। প্রয়োজনে অন্যান্য জেলা থেকেও আনা হবে। প্রায় দেড় লক্ষ শ্রমিক রয়েছে।এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলার বালু-পাথর মহাল গুলো আপাতত বন্ধ রেখে শ্রমিকদের ধান কর্তনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোস্তফা আজাদ জানান, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর বোরো ফসল আবাদ হয়েছে ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬৫ হাজার ২০০ হেক্টর, উফসী ১ লক্ষ ৫০ হাজার ২১০ হেক্টর, স্হানীয় ১ হাজার হেক্টর। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লক্ষ ১৯ হাজার ৮৮ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাইব্রিড ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন, উফসী ৬ লক্ষ ৫ হাজার ২৫৯ মেট্রিক টন স্হানীয় ১ হাজার ৯ শ মেট্রিক টন। টাকার পরিমাণ আনুমানিক পাঁচ হাজার কোটি টাকা। আগাম জাতের ধান কর্তন চলমান আছে বলে ও জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় এ বছর বোরো ফসল রক্ষার জন্য শত কোটি টাকার উপর খরছ করে ৭শ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে । ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।