বিবিএন ডেস্ক:বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং তার সাথে চলমান বিশৃঙ্খলা আমাদের জাতির সামনে থাকা গভীর চ্যালেঞ্জগুলোর স্পষ্ট প্রতিফলন। যদিও সঠিক কারণ এখনও তদন্তাধীন, আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য নাশকতার প্রমাণকে অস্বীকার করা যায় না। এই ধরনের কার্যকলাপ আমাদের প্রতিষ্ঠানের মূল ভিত্তিতে আঘাত হানে এবং এটি নিরপেক্ষভাবে নিন্দা জানানো উচিত।
যুক্তরাজ্যের ইস্টলি টাউন কাউন্সিলের একজন নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে, যার শিকড় বাংলাদেশের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত, এই ট্র্যাজেডি আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। এটি শুধুমাত্র আমার বা আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য নয়, বরং প্রবাসে থাকা প্রতিটি বাংলাদেশির জন্য গভীর বেদনার কারণ।
গত ১৬ বছরে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, গণহত্যা, সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এখন অন্তর্বর্তী সরকারের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করা আমাদের সবার জন্য বেদনাদায়ক, যারা একটি মুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে।
🔗 অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব:
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিশাল দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো—যেমন এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ নথির ক্ষতি—ক্ষমতার এক ধরনের দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দৃঢ় নেতৃত্ব আশা করে, যা ন্যায়বিচার, স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে অগ্রাধিকার দেয়।
অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে:
• অগ্নিকাণ্ডের একটি স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করা এবং দোষীদের দায়বদ্ধ করা।
• গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অবকাঠামোগুলোর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা।
• একটি বৈধ সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত, স্বাধীন এবং সময়োপযোগী নির্বাচন দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংস্কার ত্বরান্বিত করা।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে বিএনপি যুক্তরাজ্যের পক্ষে, গত ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সম্মান ও সুযোগ পেয়েছি। দেশকে পুনর্গঠনের জন্য তার ৩১ দফা কর্মসূচি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এটি তখনই সম্ভব, যখন একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে জনগণের ম্যান্ডেট প্রদান করা হবে।
⚖️ জনগণের জন্য ন্যায়বিচার:
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী শাসনের ভয়াবহতাগুলো ভোলা যায় না। ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে তার পদত্যাগ এবং পলায়ন ছিল বছরের পর বছর ধরে নিপীড়ন এবং একনায়কত্বের পরিণতি। যদি চলমান তদন্তে তার এবং তার সহযোগীদের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধে দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করতে হবে এবং তাদের নাম সন্ত্রাসবাদের প্রতিশব্দ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
🌍 আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বার্তা:
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত যুক্তরাজ্য এবং প্রতিবেশী ভারত, এটিকে স্বীকৃতি দিতে হবে যে একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করা দেশের জনগণের ইচ্ছার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক। বাংলাদেশকে গণতন্ত্র পুনর্গঠনে সংহতি প্রয়োজন, হস্তক্ষেপ নয় যা এর সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করে।
🔗 সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন:
• Tulip Siddiq questioned by officials over £4bn fraud allegations
• Secretariat fire: Awami League sabotage allegations arise
✊ পরিবর্তনের জন্য একত্রিত আহ্বান:
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তার জনগণ, প্রবাসী এবং মিত্রদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর। প্রবাসী ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে: ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্রের জন্য আমাদের কণ্ঠ আরও জোরালো করি।
আমি, ব্রিটিশ বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমি ইউকের চেয়ারম্যান, আমাদের নাগরিকদের পক্ষে যুক্তরাজ্যের ফরেন সেক্রেটারি, প্রধানমন্ত্রী অফিস এবং লেবার পার্টির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে রয়েছি। গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়—এটি আমাদের সবার জন্য, যারা আমাদের ঐতিহ্যকে অন্তরে ধারণ করে।
বিবৃতি দাতা:কাউন্সিলর শেরে এম সাত্তার
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক যুক্তরাজ্যের বিএনপি।