• ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকে ৩১টি মন্ডপে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২৪
ছাতকে ৩১টি মন্ডপে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব

ডেস্ক নিউজঃ ছাতকে ৩১ টি পূঁজা মন্ডপে পালিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। ৯ অক্টোবর থেকে মহা ষষ্ঠী পূ্ঁজার মাধ্যমে শুরু হয়ে টানা ৫ দিন ব্যাপী চলবে এ উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পালনে সর্বত্র চলছে সাজ-সাজ রব। পাড়ায়-পাড়ায় চলছে আকর্ষনীয় পূঁজা মন্ডপ তেরীর কাজ।

বরাবরের মতো এ বছরও পূঁজা মন্ডপ তৈরীতে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছেন পূঁজা কমিটির নেতৃবৃন্দ। পূঁজার সময় ঘনিয়ে আশার সাথে-সাথে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।বাশঁ,খড় ও মাটির কাজ শেষ করে এখন চলছে প্রতিমায় রংয়ের কাজ। প্রতিমা শিল্পীদের শেষ আচঁর পড়ার সাথে-সাথেই শঙ্খ ও উলু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠবে প্রতিটি পূঁজা মন্ডপ। এ লক্ষেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিটি মন্ডপে চলছে সাজ-সজ্জা ও প্রতিমা তৈরীর কাজ। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এই মুহুর্তে সনাতন ধর্মালম্বিদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসব।

উপজেলার ৩১ টি পূঁজা মন্ডপের মধ্যে ১২টি পূঁজা মন্ডপ পৌরসভায় রয়েছে। এ ছাড়া ইসলামপুর ইউনিয়নে ১টি, ছাতক সদর ইউনিয়নে ১ টি, নোয়ারাই ইউনিয়নে ১টি, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নে ১টি, দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের ৪ টি, সিংচাপইড় ইউনিয়নে ৩টি, জাউয়া বাজার ইউনিয়নে ৩ টি, দোলাবাজার ইউনিয়নে ২টি ও ছৈলা-আফজালাবাদ ইউনিয়নে ৩ টি পূঁজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।

ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন,পৌর প্রশাসক এবং থানা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।এসব বৈঠকে ৩১ টি পূঁজা উদযাপন কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক,বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক, পেশা জীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,ইমাম, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।শান্তি পুর্ণভাবে পুঁজা উদযাপনের লক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি ও গঠন করা হয়েছে।

এসব বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উৎসব চলাকালে অন্য ধর্মালম্বিদের ধর্ম পালনে কোনো ব্যাঘাত ঘটে এমন কোন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। এ ছাড়া আযান-নামাজের নির্ধারিত সময়ে গান-বাজনা,উচ্চ শব্দ বিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং আতশবাজী বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রতি পূঁজা মন্ডপে নারী-পুরুষদের জন্য পৃথক রাস্তা, সিসি টিভি, নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম রাখা বাধ্যতামুলক করা হয়। ছাতক পৌর পূঁজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুন অধিকারী এবং সাধারণ সম্পাদক দোলন তরফদার জানান,প্রশাসনের বৈঠকে যেসকল বিষয়ে আলোচনা বা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে,বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রিয় কমিটির পক্ষ থেকেও প্রায় এমনই নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা সকল পূঁজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে মেনে চলার জন্য আলোচনার বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

বরাবরের মতো এ বছরও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সার্বিক ও আন্তরিক সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ শারদীয় উৎসব পালিত হবে বলে তারা আশাবাদী। ছাত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া হাসান জানান, পূঁজায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ইতি মধ্যে সকল পূঁজা কমিটি নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। প্রতিটি মন্দিরে থানা পুলিশের পাশাপাশি আনসার, গ্রাম পুলিশ,স্বেচ্ছাসেবক টিম ও মোবাইল টিম কাজ করবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবক টিম সড়কে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা মুন্না সকল কে শান্তিপূর্ন ভাবে উৎসব পালনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, উৎসব চলাকালিন সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময়ই নজরদারী থাকবে। ছাতক হচ্ছে উল্লেখযোগ্য সম্পীতির শহর। গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন তিনি। শান্তি বিনষ্টকারী এবং গুজব ছড়ানো কারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্তা নেয়া হবে।

ছাতক সেনাবাহিনী ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর জাবির বলেন, শারদীয় উৎসব উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী নিয়মিত মোবিং করবে। দুর্গাপূঁজা পালনে রাষ্ট্রিয় নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সনাতন ধর্মীয় সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।