• ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অপরাধ নির্মূলে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের সাড়াশি অভিযান অব্যাহত

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৯, ২০২৪
অপরাধ নির্মূলে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের সাড়াশি অভিযান অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের সাড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার নবাগত পুলিশ সুপার যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জ দের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। সীমান্তের চোরাচালান, মাদক নির্মূল, অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ, নদী পথে চাদাঁবাজি বন্ধ সহ অন্যান্য অপরাধ নির্মূল জিরো টলারেন্স নীতি পালনের। পুলিশ সুপারের নির্দেশের পর পরই সুনামগঞ্জ সদর থানা,তাহিরপুর থানা,বিশ্বম্ভরপুর থানা ও ডিবি পুলিশের আভিযানিক দল এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৫ ব্যক্তি কে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

২৬ আগস্ট রাত থেকে ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে জব্দকৃত বালু, পাথর, চিনি ও উপকরণের মূল্য প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মিডিয়াসেল সূত্রে জানা গেছে, তাহিরপুর থানার এসআই মো. হেলাল উদ্দিন ও এসআই আবুল কালাম চৌধুরী সোমবার রাত ১২টায় তাহিরপুর থানার রামজীবনপুর পা-ব নদীতে ৭টি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করেন। প্রতিটিতেই বালুভর্তি ছিল। ৭টি নৌকাতে প্রায় ১ হাজার ৯০০ ফুট বালু ছিল। এসব বালু অবৈধভাবে তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটা থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে বালুভর্তি ৭টি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করে। জব্দকৃত মালামাল ও পণ্যের মূল্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। এসময় নৌকায় থাকা ১৩জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন তাহিরপুরের তোফায়েল মিয়া, শাহিবুর রহমান, সাইদুল ইসলাম, সাহাবুল ইসলাম, শাকিনুর, জোনায়েদ মিয়া, জনিক মিয়া, রাসেল মিয়া, আজাদ মিয়া, আলী নেওয়াজ, পারভেজ মিয়া, বিশ্বম্ভরপুর থানার বসর মিয়া। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার তাহিরপুর থানায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে সুনামগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের এসআই এসএম ওয়াসিমুল ইসলাম ও এএসআই আব্বাস এই অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় চার হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়। তাছাড়া একটি বাল্কহেড নৌকাও জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের মূল্য প্রায় ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশের মিডিয়া সেল। এসময় তাহিরপুর থানার এবাদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সময়ে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ধোপাজান নদীতে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িত বালু-পাথর ভর্তি দুটি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করা হয়। যার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। এদিকে বিশ্বম্ভরপুর থানা পুলিশ চালবন বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চিনি চোরাচালানে জড়িত ৫ চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে। পৃথক অভিযানে তাদের কাছ থেকে ২৩ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিশ্বম্ভরপুরের মোশারফ হোসেন, আফাজ উদ্দিন, খোরশেদ আলম, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রুবেল মিয়া ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার হাবিবুর রহমান। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি পিকআপ ভ্যান ও একটি সিএনজিও উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত চিনির মূল্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা।

গত ২৭ আগস্ট সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়পাড়া এলাকার সুরমা নদীর উপর থেকে ৩ হাজার ঘনফুট বালু ,একটি বাল্কহেড নৌকা সহ সুহেল ও লিমন নামে দুই জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। আটককৃত বালুর আনুমানিক মূল্য ৮০ লক্ষ টাকা। ডিবি পুলিশের ওসি মোঃ আমিনুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় এসআই সুমন,অলক ও নুরনবী এই অভিযান চালান।

সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার এমএন মোর্শেদ বলেন, গত দুদিন ধরে নদীতে অবৈধভাবে বালু পাথর আহরণের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। তাহিরপুরে সেনাসদস্যদেরও সহায়তা নেওয়া হয়েছে। তবে এই অবৈধকাজ রাতেই বেশি হওয়ায় অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও আমরা অভিযান চালাচ্ছি। অভিযানে বালু, পাথরসহ এর সঙ্গে জড়িতদেরও গ্রেপ্তার করছি। একই সঙ্গে চিনি চোরাচালানে জড়িতদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে।