• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সুনামগঞ্জ জেলা পর পর তিন দফা বন্যার কবলে,জন দুর্ভোগ চরমে 

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ১৩, ২০২৪
সুনামগঞ্জ জেলা পর পর তিন দফা বন্যার কবলে,জন দুর্ভোগ চরমে 
লতিফুর রহমান রাজু.সুনামগঞ্জ: সীমান্তের ওপারের  মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির অবিরাম ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল আবার ও প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই সুনামগঞ্জ সদরের সাথে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।কিছু কিছু বাড়ি ঘর,  সড়ক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আবার ও মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।

পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বর্ষণের ফলে  সুনামগঞ্জ জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি শুক্রবার সকালে  বিপদসীমার  ৩০   সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়।অবশ্য বিকালে কমে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৫৫ মিলিমিটার। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৬০ মিলিমিটার।

এতে সুরমা নদী তীরবর্তী সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকার বাসা বাড়ির আঙ্গিনায় পানি প্রবেশ করছে।  শহরের অনেক রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত।
সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, বড়পাড়া,উত্তর আরপিন নগর, বাজার, কাজীর পয়েন্ট, ষোলঘর, নবীনগর সুলতানপুর, ধোপাকালী সহ অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত লোকজন ইতিমধ্যেই অনেক আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

সীমান্তের ওপারে মেঘালয়-চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী দিয়ে পানি সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে নামছে। সেইসঙ্গে আসছে পাহাড়ি ঢলের পানি। দোয়ারাবাজারের লক্ষ্মীপুরের খাসিয়ামারা নদী, চিলাই নদীর পানি বাড়ছে। তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, রক্তি, মাহারাম, বৌলাই, পাটলাই নদী সহ অন্যান্য অভ্যন্তরীণ নদ নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ফলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত ১৭  জুন থেকে সৃষ্ট বন্যার রেশ কাটাতে না কাটাতে আবার ও ঢল নামায় মানুষ এক অজানা আতঙ্কে রয়েছেন।
গত ১৭ জুন ঈদের দিন সকাল বেলা সর্ব প্রথম পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। ঐদিন সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। আবার গত ১ জুলাই দ্বিতীয় বার বন্যা কবলিত হয় ঐ সময় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। ১২ জুলাই শুক্রবার ভোর রাত থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত ও ঢলের কারনে হু হু করে পানি বেড়ে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। ফলে তিন দফা বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জ বাসী । ফলে জনজীবন চরম দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। গত দুই বারের বন্যার ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবার ও ঘরবাড়ি,দোকান পাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়ক প্লাবিত হলে মানুষ সীমাহীন কষ্টের সম্মুখীন হন। বিশেষ করে দিন মজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে না পারায় খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। সরকারী সাহায্য সহায়তা যা দেয়া হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন আনোয়ার পুর সড়ক প্লাবিত। শক্তি য়ার খলা সড়ক ও প্লাবিত। দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা নাইম জানান তার ইউনিয়নের কিছু  গ্রাম প্লাবিত। তাহিরপুর উপজেলার কামাল হোসেন জানান, আনোয়ার পুর থেকে বীর নগর ব্রীজ পর্যন্ত প্রচুর পানি। অন্যান্য নিম্নাঞ্চল ও প্লাবিত।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন বন্যা মোকাবিলার জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ইতিমধ্যেই  সকল ইউএনও দের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।