• ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

রাঙামাটিতে লোডশেডিং চরমে:গরমে-ঝুঁকিতে শিশু,হার্ট ও স্নায়ু রোগীরা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ১৭, ২০২৩
রাঙামাটিতে লোডশেডিং চরমে:গরমে-ঝুঁকিতে শিশু,হার্ট ও স্নায়ু রোগীরা

 

|| মুহাম্মদ ইলিয়াস,রাঙামাটি প্রতিনিধি ||

রাঙামাটিতে লোডশেডিং নামক বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরমে পৌঁছে গেছে। তীব্র গরমের মাঝেও ঘন্টার পর ঘন্টা কাটছে বিদ্যুৎবিহীন। সেই কারণে প্রচন্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পাহাড়ি জনপদের মানুষ। শিশু, হার্টের রোগী, স্নায়ুরোগী, এজমাজনিত সমস্যায় কাতর মানুষজন মারাত্মক ঝুঁকিতে দিনাতিপাত করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাঙামাটি জেলাতে প্রায় ৬৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। তন্মধ্যে শহরে আছে ৩১,০৬২ জন বিদ্যুৎ গ্রাহক। জেলার গ্রাহকদের জন্য ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। শুধু মাত্র শহরের গ্রাহকদের জন্য লাগে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। রাঙামাটির ১০ উপজেলার মধ্যে নানিয়ারচর ও লংগদু উপজেলা রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আওতার বাইরে রয়েছে। অবৈধভাবে হিটারসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালনা ও হুকিং কানেকশনের কারণে বিদ্যুৎ অপচয় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট বিষয়ে গ্রহক মো: আবুল কালাম আযাদ বলেন, কাপ্তাই গ্রীড থেকে রাঙামাটি শহরবাসীর চাহিদা মেটাতে চাইলে পূর্বের মতো ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কঠিন কিছু না। যাদের চোখের জলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রজেক্টের সৃষ্টি, খোদ তারাই নগদ টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কাপ্তাই থেকে সরাসরি রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করণ খুবই সহজ। সেই সহজ কর্মটি রহস্যজনক কারণে কঠিন করে রেখে রাঙামাটিবাসীকে বৈদ্যুতিক সেবা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। এখন পিছিয়ে পড়া জনপদ রাঙামাটিতে এখানে ঘন্টায় বিদ্যুৎ যায় আর আসে।

এইভাবে বৈদ্যুতিক আসা-যাওয়ার খেলায় পাহাড়ের মানুষ চরম অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে। লাগাতার গত দু-তিন সপ্তাহের চলমান ভোগান্তি থেকে কোন ক্রমেই মুক্তি মিলছে না। রোববার দিনগত রাত হতে সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাঙামাটিবাসীকে অসংখ্যবার লোডশেডিং মোকাবেলা করতে হয়েছে।

প্রকৃতির বৈরী পরিস্থিতির প্রভাবে হঠাৎ সৃষ্ট তীব্র গরম আর বৈদ্যুতিক ভেল্কিবাজির কারণে মানুষের প্রান যেন ওষ্ঠাগত। এমন বৈরী পরিবেশে ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে ছোট্ট শিশু, হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ ও এজমাসহ ঠান্ডা জনিত সমস্যায় কাতর মানুষজন। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৈদ্যুতিক লোডশেডিংয়ের সাথে সাথে রোগীদের মাঝে হাসফাস শুরু হয়ে যায়।

অথচ রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীলদের অনেকেই হুকিং কানেকশন দিয়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবসার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অপরদিকে রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ আসে বিদ্যুৎ যায় এই খেলায় মানুষের বেঁচে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছ ।

এ বিষয়ে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সাইফুর রহমান বলেন, শুধু মাত্র শহরের ৩১ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের বিপরীত ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার। আমারা গত রাতে পেয়েছি ৫ মেগাওয়াট ও আজকের দিনের জন্য মাত্র ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। হুকিং কানেকশন থাকতে পারে, আমরা জানতে পারলে বিচ্ছিন্ন করি। বর্তমানে আমরাও নিরুপায় বলে যোগ করেন এ কর্মকর্তা।