নিজস্ব প্রতিবেদক: ভালোবাসার চোখ থাকে অন্ধ। প্রেম- জাত,ধর্ম,সমাজ, আইন-কানুন কিছুই দেখে না। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল তাঁর প্রেমিকার কাছ থেকে সে সুযোগ নিয়েছেন। যুবতীটি জাত,ধর্ম,সমাজ ত্যাগ করে শুধু তার ভালোবাসার এই মানুষটিকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলোতার ভালোবাসার এই মানুষটিকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলো।
যুবতিটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। সে হার্টের রোগী। তার হার্টের সাইজ অনেক বড় হয়ে গেছে। যার কোন চিকিৎসা নেই। মৃত্যুই যার শেষ পরিনতি।
এমনি অবস্থায়ও ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল এর প্রেমে সে বিভোর। রয়েল কারাগারে আছেন, কষ্ট করছেন এটা মেনে নিয়ে পারছে না যুবতি। তার প্রেমিকের সাথে এক মিনিট কথা বলতে গত ১৯ অক্টোবর তিনি গোপনে কারাগারে এক ব্যক্তিকে পাঠিয়েছেন।
গত বুধবার স্থানীয় একটি অনলাইন টিভির সাথে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলছিলেন।
গত ১৬ অক্টোবর তাঁর প্রেমিক ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েলের চেম্বারে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং তাদের প্রেম কাহিনীর বিস্তারিত বর্ণনা দেন এই যুবতি।
তিনি জানান, ক্লাস নাইনে পড়ার সময় তিনি পড়া মনে রাখতে পারতেন না। সে জন্য চিকিৎসা নিতে আসেন মানসিক চিকিৎসা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল এর কাছে।
রয়েল সুন্দরী এই তরুনীকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি। নানা কথা বলে ছল করে তরুণীর মন জয় করার চেষ্টা করেন। সফল হোন তিনি, এক পর্যায়ে তাকে চেম্বারেই ধর্ষণ করেন। রয়েলের প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে যাওয়া তরুণী বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরবর্তিতে চিকিৎসার অজুহাতে তরুণীর নিয়মিত রয়েল এর চেম্বারে আসা যাওয়া করতেন। চলে তাদের রিলেশন। বিয়ে করার আশ্বাসে চলে শারিরীক অভিসার।
তরুণী যুবতি হয়ে উঠেন। সিলেট এমসি কলেজ থেকে কৃতিত্তের সাথে মাস্টার্স করেন। চতুর প্রেমিক ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ নিজে কলেমা এবং সুরা মুখস্ত করেন যুবতিকে জানান দেন তিনি তাকে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করবেন।
সুন্দরী এই যুবতির জন্য দেশ-বিদেশ থেকে অনেক ভালো বিয়ে আলাপ আসে। বিয়ের জন্য অভিবাবকরা চাপ দেন কিন্তু যুবতি তাতে রাজি হোন নি।
একসময় প্রকাশ হয়ে যায় ডাক্তারের সাথে তার সম্পর্কের কথা। পরিবারের পক্ষ থেকে শেষ চেষ্টা করেও তাকে ফিরানো যায়নি। এ অবস্থায় পরিবার যুবতির সাথে সর্ম্পক না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সুযোগে ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল যুবতিকে বেশ কিছু দিন ঢাকার উত্তরায় বাসা ভাড়া করে রাখেন এবং পরে সিলেটে। যুবতীর বেশ কয়েকবার গর্ভপাতও করানো হয়।
গত ১৬ অক্টোবরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তরুণী বলেন, রয়েল তাকে চেম্বারে ডেকে নিয়ে যান এবং শারীরিক সর্ম্পক করতে চান। এতে তিনি রাজি হন নি। তিনি তার প্রেমিককে বলেন- আমি অন্তসত্ত্বা অন্যদিকে আমি হার্টের রোগী, আমার হার্টের কোন চিকিৎসা নেই। এ অবস্থায় আমি কী করবো সন্তান জন্ম দেয়া কিংবা গর্ভপাত কোনটিই করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমাকে তুমি তাড়াতাড়ি বিয়ে করো।
যুবতির কথা শুনে ডাক্তার রামেন্দ্র কুমার সিংহ রয়েল বলেন, এক কাজ করো তোমাকে আমি এক কোটি টাকা দিয়ে দেবো , তুমি এই টাকা নিয়ে বিদেশে চলে যাও। আর সব কিছু ভুলে যাও।
ভালোবাসার মানুষের মুখে এমন কথা শুনে যুবতী নিজেকে স্থির রাখতে পারেনি। তিনি প্রেমিক ডাক্তরের গালে সজোরে থাপ্পড় দিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন। সাথে সাথে তার হাতে থাকা সেলাইনের ক্যনেলা দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে।
এসময় প্রেমিক ডাক্তার চেম্বার থেকে বের হতে চাইলে যুবতী তখন সার্টের কলারে ধরে টান দেয়। চতুর প্রেমিক তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে।
সে বলে ঠিক আছে আমি তোমাকে বিয়ে করবো তবে সিলেটে নয় ঢাকায়। তুমি অপেক্ষা করো আমি গাড়ি নিয়ে আসছি।
এই বলে সে বের হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে এবং যুবতী তাকে ব্ল্যাকমেইল করছে বলে পুলিশকে জানায়।
পুলিশ যুবতীর বক্তব্য শুনে এবং মোবাইলে ধারণ করা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি এবং কল লিস্ট দেখে আসল ঘটনা বুঝতে পারে। তখন ডা. রামেন্দ্রকে আটক করে নিয়ে যায়।
(সূত্র:দৈনিক সিলেট)